পদ্মা রেল সেতুতে স্লিপার স্থাপন ও ঢালাইকাজ শেষ
পদ্মা রেল সেতুতে সর্বশেষ স্লিপার বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে সর্বশেষ সাত মিটার অংশের ঢালাইকাজ শেষ হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে আজ বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ইফতারের আগমুহূর্তে স্বপ্নের পদ্মা রেল সেতুতে রেল লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
সর্বশেষ স্লিপার স্থাপন ও ঢালাইকাজের মধ্য দিয়ে সেতুর দুই পাশের ভায়াডাক্ট ৬.৬৮ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ সম্পন্ন হয়।
কাজ সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ। আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
এদিকে, রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত রেলসংযোগ প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যানবাহন চালু রেখে সেতুর নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপন। আজ কাজ শেষ হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ জানান, সাত মিটারের কংক্রিটিং শক্ত হতে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। এর পরই এটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে। দ্রুত গতিতে ট্রেন চলার সময় বর্তমানে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘উদ্বোধনের পর কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। সব নকশা চুড়ান্ত করে গত বছরের নভেম্বরে মূল সেতুতে রেল লাইনের কাজ শুরু হয়। চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ হলো। ঢাকা থেকে মাওয়া এই অংশের কাজের অগ্রগতির ৭৪ ভাগ, মাওয়া থেকে ভাঙা অংশের অগ্রগতি ৯২ ভাগ এবং ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ ভাগ। সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ ভাগ। আমরা আশাবাদী প্রাকৃতিক যদি কোনো দুর্যোগ না হয় তবে প্রকল্পের যে মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন মাসে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।’
প্রকৌশলীরা জানান, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু ও দুইপাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের আটটি স্লিপার ছাড়া বাকি সবই কংক্রিটের তৈরি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এ রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুই পাসের স্টেশন নির্মাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে।