পরকীয়ার জড়িয়ে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যা, গ্রেপ্তার সোলেমান

পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোলেমান হোসেন (৩৫)। এতে বাধা দেন তার স্ত্রী খালেদা আক্তার পিংকি (২৫)। এ বিষয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী ও চার মাসের কন্যা সন্তান সালমা আক্তার জান্নাতকে গলা কেটে হত্যা করেন সোলেমান। এ অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মালিবাগের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ (এসএসপি) সুপার মুক্তা ধর।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি দাবি করে, ২০১৩ সালে পারিবারিকভাবে খাগড়াছড়ির খালেদা আক্তার পিংকির সঙ্গে বিয়ে হয় সোলেমান হোসেনের। তাদের সংসারে ছিল পাঁচ বছর ও চার মাস বয়সী দুই কন্যা সন্তান। পিংকির পারিবারিক অবস্থা ভালো হওয়ায় সম্প্রতি যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে সোলেমান। কিন্তু পিংকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোলেমান পার্শ্ববর্তী এলাকার এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
মুক্তা ধর বলেন, ‘পরকীয়ার সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় প্রথমে স্ত্রীর সঙ্গে সোলেমানের কথা কাটাকাটি হয়। কাটাকাটির একপর্যায়ে গৃহস্থলির কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে পিংকিকে এবং পরে চার মাস বয়সী শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেন সোলেমান।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গলা কেটে হত্যার পর কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে ঘরের মেঝেতে রেখে তালা দিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান সোলেমান। হত্যাকাণ্ডের পর পিংকির বাবা আব্দুল খালেক দুলাল বাদী হয়ে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার হয়।
মুক্তা ধর বলেন, ‘ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকা থেকে সোলেমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে সোলেমান হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে তিনি একাই জড়িত ছিলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোলেমান গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলে অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০১৩ সালে পারিবারিকভাবে তার সঙ্গে পিংকির বিয়ে হয়। বিয়ের পর সোলেমান গ্রামের বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তাদের ১০ বছরের সংসারে ফারিয়া সুলতানা (৫) ও সালমা আক্তার জান্নাত নামে দুই কন্যা সন্তান ছিল।