পলাতক খুনিদের ফেরাতে তৎপরতা বাড়াবে সরকার
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের খুনিরা একই চক্রের। এখনো বিদেশে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের ফিরিয়ে আনতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
আজ রোববার সকালে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘৩ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগীদের বিষয়ে কমিশন গঠনের বিষয়টি এখনো সরকারের আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে আছে। সামনের দিনগুলোতে এই প্রচেষ্টা আরো জোরদার করা হবে। শহীদদের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে সরকার কাজ করছে।’
দিবসটি উপলক্ষে সকালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন। এ সময় তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।
পরে ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে জোটের নেতারা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
দিনের কর্মসূচির শুরুতে সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের বিভিন্ন কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়; উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা।
সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও এম মনসুর আলী এবং একই সময় রাজশাহীতে এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় নেতা এম মনসুর আলীর ছেলে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা হাজার বছরেও কাটিয়ে ওঠার মতো নয়। এই রাজনৈতিক শূন্যতা অপূরণীয় ক্ষতি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার হয়েছে। দেশবিরোধী শক্তি এখনো রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এসব চক্রান্ত মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জেলহত্যা দিবস পালন করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তাঁর ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে কারাগারে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রের হেফাজতে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনাটি ‘জেলহত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশে।
১৯৭১ সালে এই চার নেতার নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে শপথ নিয়েছিল স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদক