পাহাড়িদের জুমবাগান পোড়ানোর মামলায় কারাগারে ২
বান্দরবানে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে পাহাড়িদের জুমচাষের বাগান পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ শনিবার বান্দরবানের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সুরাইয়া আক্তার আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তার দুজনকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. আরিফ হোসেন। তারা দুজনই এজাহারভুক্ত আসামি।
পুলিশ ও পাহাড়িরা জানায়, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ডলুঝিরি মৌজা এলাকায় ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লাংকম ম্রো কারবারিপাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কারবারিপাড়া এবং রেংয়েন ম্রো কারবারিপাড়ার পাহাড়িদের জুমচাষের বাগান আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিক, কর্মচারী ও শ্রমিকরা। এ ঘটনায় আটজনকে আসামি করে লামা থানায় একটি মামলা করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। মামলার অন্য আসামিরা হলেন লামা রাবার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. কামাল উদ্দিন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. জহিরুল হক, মো. নুরু, দুর্যোধন ত্রিপুরা ও হাজিরাম ত্রিপুরা।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু জাফর বলেন, পাহাড়িদের যুগযুগ ধরে দখলীয় সৃজিত বাগান আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে লামা রাবার কোম্পানি। এ ঘটনায় লাংকম ম্রো বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার এ মামলায় অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পাড়াপ্রধান (কার্বারি) লাংকম ম্রো ও স্থানীয় রুন্দোজন ত্রিপুরা অভিযোগ করে বলেন, লামা রাবার কোম্পানির লোকজন পাড়াবাসীর দখলীয় জুমের বাগান আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় ৩০০ একর জমি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তারা। ভয়ে আতঙ্কে তিনটি পাড়ার ৩৯টি পরিবারের আড়াই শতাধিক মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে সেদিন। উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছে তারা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে লামা রাবার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পাড়াবাসীর কোনো জায়গা দখল করা হয়নি। আগুনে পোড়ানো জমি কোম্পানির লিজভুক্ত জমি। ৬৪ জন মালিকের এক হাজার ৬০০ একর জমি রয়েছে। তারমধ্য ৪০০ একরের মতো বিরোধীয় জমি রয়েছে। যেগুলো পাহাড়িরা তাদের নিজেদের বলে দাবি করে আসছে৷
বিষয়টি নিশ্চিত করে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, পাহাড়িদের বাগান পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় দুজনকে গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আজ আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।