পিরোজপুরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সেবায় হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল
পিরোজপুরে দিন দিন বেড়ে চলছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। ফলে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সিভিল সার্জন বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে, কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের। রয়েছে অপরিচ্ছন্নতার অভিযোগও।
জানা গেছে, পিরোজপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫৩।
এদিকে, জেলা হাসপাতালের ২৪ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ৪২ জন।
জেলায় গত এক মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়েছে এক হাজার ১৮২ জন, যাদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। তবে, রোগী ও স্বজনদের রয়েছে নানা অভিযোগ।
এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘রোগী আসছে, কিন্তু সিট নেই। সিট থাকলেও রেক্সিন ভালো নেই। নোংরা পরিবেশ। পরিষ্কার করতে আসে না কেউ। নিজেদেরটা নিজেরাই যতটুকু পারা যায়, করতে হয়।’
রোগীদের সঙ্গে সেবিকারা দুর্ব্যবহার করছেন অভিযোগ তুলে আরেক স্বজন বলেন, ‘পরামর্শ চাইতে গেলেও রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি ক্যানুলা সরে যাওয়ায়, তা পরিবর্তন করে দিতে বললে তাঁরা (সেবিকা) গতকাল বলেছেন, আর ক্যানুলা দেওয়া হবে না।’
অপর এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘ফ্যান ঘোরে না। মশারি নেই। কোনো কথাই বলা যায় না। একটি সিরিঞ্জ, তাও বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।’
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুকে কোলে নিয়ে তাঁর মা জানান, ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসা শুরু হয়নি। লিখে দেওয়া ওষুধ বাইরে থেকে কিনে এনে বসে আছেন, কিন্তু মেলেনি ডাক্তারের দেখা।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেবিকারা জানান, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ২৪টি। সেখানে রোগী ভর্তি আছে ৪২ জন। ওয়ার্ডে সেবিকা মাত্র তিন জন। ফলে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী যেভাবে সেবা দেওয়া দরকার তা তাঁরা দিতে পারছেন না।
সিভিল সার্জন অফিস জানায়, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে পিরোজপুরে মোট ৬৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের জন্য আইভি স্যালাইন মজুদ আছে এক হাজার সিসির ১৩ হাজার ৪১৮টি এবং ৫০০ সিসির পাঁচ হাজার ৩৩১টি। ব্যবস্থা আছে অন্যান্য চিকিৎসারও।
জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও সেবা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট।’
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ আছে। চাইলে সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে, বিশুদ্ধ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই।’ একই সঙ্গে ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হয়ে পানিশূন্যতা বেশি হলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।