‘প্রকৃত অপরাধী না ধরতে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রত্যেক বিভাগে দুর্নীতির কারণে সরকারের অব্যস্থাপনা ও নজরদারির অভাব স্পষ্ট হয়েছে। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিরোধীদলকে নির্মূল করতে চাইছে সরকার। যখনই কিছু ঘটে, বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হয়৷ এমনকি অনেক সময় গায়েবি মামলা হয়। মূলত প্রকৃত অপরাধী যেন ধরতে না হয় এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে আজ বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম থেকে সবাই দেখেছে দুর্গাপূজার প্রত্যেক ঘটনায় সরকারি দলের নেতাকর্মীরা দায়ী। অথচ মামলা দেওয়া হয়েছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামে। রংপুরে যখন পুলিশ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলছেন তখন অন্যদিকে সব জ্বালিয়ে দেওয়া হল।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে সরকারের এজেন্সিগুলো এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। মূলত দেশের মানুষের যে সংকট, সে সংকট থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরাতে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আর মামলা দেওয়া হচ্ছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামে। এগুলো করা হচ্ছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের হয়রানি করা, মামলা বাণিজ্য করার জন্য।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নোয়াখালীর ঘটনায় আসামি ফয়সালকে দিয়ে আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর নাম বলিয়েছেন। এ কথা ওই এলাকার কেউ বিশ্বাস করবে না যে, তিনি এ কাজ করেছেন। এটা সরকারি দলের লোকেরা করেছে, ছয় ঘণ্টা সেখানে তাণ্ডব চলেছে, কিন্তু পুলিশ আসেনি।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘দুর্গাপূজার ঘটনায় যা মামলা হয়েছে তার মধ্যে বিএনপিরই ১৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত পূজামণ্ডপে এ হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য। বরকত উল্লাহ বুলুসহ যাদের নামে মামলা করা হয়েছে, তারা কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা যাতে সামনের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়ানো হয়েছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘এ সরকারকে কেউ বিশ্বাস করে না। কারণ, এ সরকার সব সময় প্রতারণা করে, কথা যা বলে সেটা কখনোই করে না। রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করে, ধর্মকে হাতিয়ার করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এটা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, মুসলমান—সবাই বলে।’
অবিলম্বে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে যেসব মামলা হয়েছে সবগুলো মামলা প্রত্যাহার করে নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা জড়িত, যারা মূল ইন্ধনদাতা, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনায় ইকবাল হোসেন গ্রেপ্তারের সাজানো নাটক। এটা কুমিল্লার সবাই বলছে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা। স্থানীয় হিন্দুরাও এই কথা বলেছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এবার নির্বাচনের আগে থেকেই অতি দ্রুত মামলাগুলো শেষ করতে চায়, যাতে বিএনপি নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। কিন্তু, এবার আমরা নির্বাচন নিয়ে চিন্তাই করছি না। আমাদের দাবি—এ সরকার আগে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হবে, সে নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।’