প্রতারণার মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ ৫ জন কারাগারে
প্রতারণার মামলায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন, ইউপি সদস্য সুজন মিয়াসহ পাঁচজনকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান দিলাওয়ার হোসেনসহ অন্য আসামিরা আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার এমরান বাহার চৌধুরী ইউপি চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন, একই উপজেলার পারকুল গ্রামের তেরা মিয়া, মো. নইম উল্লাহ, মশাহীদ মিয়া ও আউশকান্দি ইউপি মেম্বার সুজন মিয়াকে আসামি করে জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেলিমা বেগম, সাহেলা বেগম, সাবানা বেগম ও শাহিনা বেগম নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা মামলার বাদী এমরান বাহার চৌধুরীকে তাঁদের পৈতৃক বিষয় সম্পত্তি দেখাশোনা করতে আম-মোক্তার নিযুক্ত করেন। সেলিমা বেগম ও শাহিনা বেগমের বাবা যুক্তরাজ্যে বসবাস করার সময় আসামি তেরা মিয়া ও মো. নইম উল্লাসহ তাঁদের অপর ভাইবোনদের সব পারিবারিক খরচ বহন করাসহ দেশে প্রচুর জায়গা জমি ক্রয় করে ভোগ ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দেন।
কিন্তু আসামি মো. নইম উল্লা অপরাপর আসামি ইউপি চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন, ইউপি মেম্বার সুজন মিয়া ও মোশাহিদ মিয়ার সহায়তায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সেলিমা বেগম ও শাহিনা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে একটি জাল অঙ্গীকার নামা তৈরি করেন। এ সময় সেলিমা বেগম ও শাহিনা বেগম লন্ডনে অবস্থান করলেও এলএ মামালা (২০০৭-০৮) স্বত্ব হিসেবে দাখিল করে ১৯১৫৩১ নং ট্রেজারি চেক মূলে এক লাখ ৯১ হাজার ৫৩১ টাকা আত্মসাৎ করেন। অপর আসামি তেরা মিয়া আসামি মোশাহিদ মিয়া, সুজন মিয়া ও দিলাওর হোসেনের সহায়তায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সেলিমা বেগম ও শাহিনা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া অঙ্গীকার নামা তৈরি করে এলএ মামলা (নং-০৩/২০১০-১১) দেখিয়ে ট্রেজারি চেক নং-০২৭৭৭২৭ মূলে ছয় লাখ তিন হাজার ৩৯৪ টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
উল্লেখ্য, স্বাক্ষী সেলিমা বেগম ও শাহিনা বেগমের নাম বিকৃত করে বাংলায় স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে তারা জন্ম সূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় বাংলায় স্বাক্ষর করতে পারেন না এবং এ সময় তারা দেশেও ছিলেন না।
এ ব্যাপারে মামলা করার পর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা সিআইডি পুলিশে পাঠান।
সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা প্রামাণিত হওয়ায় আউশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. দিলাওর হোসেন, ইউপি মেম্বার সুজন মিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালত তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে আসামিরা আদালতে হাজির হলে আদালত তাঁদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।