প্রাথমিকে নিয়োগ : বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি, গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সতর্ক রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। এ ছাড়া পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে বসানো হচ্ছে জ্যামার।
এদিকে ফেসবুকসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ঠেকাতেও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সারা দেশের দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কয়েকটি ধাপে জেলাভিত্তিক এ নিয়োগ পরীক্ষার সব আয়োজন সরকার এরই মধ্যে শেষ করেছে। প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২২ এপ্রিল।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে যাতে কেউ পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন, এ জন্য কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট এলাকায় বিটিআরসির সঙ্গে আলোচনা করে জ্যামার বসানোর কথা বলা হয়। পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে এসব জ্যামার বসানো হবে। কেন্দ্রগুলোতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ঢাকা থেকে জেলার ট্রেজারি সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র পৌঁছানো হবে।
যেকোনো প্রকার ইলেকট্রনিকস কমিউনিকেটিভ ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার্থীরা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন,এ জন্য প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। নারী প্রার্থীদের কানে কোনো ডিভাইস আছে কি না, তা কঠোরভাবে যাচাই করা হবে।
এদিকে প্রাথমিক্ ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২২ এপ্রিল প্রথম পর্যায়, ২০ মে দ্বিতীয় পর্যায়ের এবং ৩ জুন তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আবেদনকারীর নিজ নিজ জেলায় বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কোন তারিখে কোন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের আবেদনে উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে যথাসময়ে ০১৫৫২১৪৬০৫৬ নম্বর হতে প্রবেশপত্র ডাউনলোডের এসএমএস প্রেরণ করা হবে।
আগামী ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য প্রার্থীগণ আগামীকাল রোববার থেকে admit.dpe.gov.bd- ওয়েবসাইটে ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অথবা এসএসসির রোল, বোর্ড ও পাশের সন দিয়ে লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রঙিন প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রার্থীদেরকে অবশ্যই প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট এবং নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে হলে যেতে হবে।
ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলী এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এবং প্রবেশ পত্রে পাওয়া যাবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্গপ্তিতে বলা হয়েছে।
২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে যেসব জেলার সব উপজেলায় পরীক্ষা হবে সেগুলো হলো—ঢাকা, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট। এছাড়াও কিছু জেলার উপজেলায় পরীক্ষা হবে সেগুলো হচ্ছে, যশোর (ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা), সিরাজগঞ্জ (উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর), ময়মনসিংহ (ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ), নেত্রকোনা (আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া), কিশোরগঞ্জ (অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী), টাঙ্গাইল (সদর, ভুয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর), কুমিল্লা (বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি) ও নোয়াখালী (কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, সুবর্ণচর)।