প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন, ধর্ষণের অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে বুলবুল আহমেদ বিপুল (৩০) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই তরুণী তিনদিন ধরে বুলবুলের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করেন। আজ শুক্রবার সকালে মারধর করে বের করে দেয় বুলবুলের পরিবার। এরপর থেকে বিষয়টি থানা পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে।
অভিযুক্ত বুলবুল উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গজারমারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে চার বছর আগে বুলবুলের সঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছর ধরে তাদের মোবাইলে কথাবার্তাও ফেসবুকের মাধ্যমেই প্রেম চলতে থাকে। এক পর্যায়ে বুলবুল ওই তরুণীকে নিয়ে আটঘরিয়া উপজেলায় নিজের বড় বোনের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেন। এরপর থেকে বুলবুল তাকে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন বড়িতে নিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকেন। ধর্ষণের কারণে ওই তরুণী এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বুলবুলের চাপে পাঁচ মাসের গর্ভের সন্তান নষ্ট করেন। তবে কিছুদিন ধরে বুলবুল ওই তরুণীকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। এতে ওই তরুণী গত মঙ্গলবার বুলবুলের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবি করেন। এ সময় বুলবুল বিয়ের করতে অস্বীকার করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তখন মন্ডুতোষ ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী ওই বাড়িতে গ্রামপুলিশ নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীর নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিষয়টি আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নেন। তবে বুলবুলের পরিবারের কারণে গত তিনদিনেও সমাধান হয়নি।
এদিকে, ওই তরুণীর অবস্থানের পর থেকেই বুলবুলের বাবা ইসমাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার কাছে ঘুরতে থাকেন। পরে ওই আওয়ামী লীগ নেতার পরামর্শে আজ শুক্রবার সকালে মেয়েটিকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। সে সময় ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়।
ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ‘প্রেমের পর থেকেই বুলবুল তার বোন ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আমাকে বিয়ে করবে বলে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিত। এরপর একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ভিডিও ধারণ করে সে নিয়মিত আমাকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করত। গর্ভপাতও করিয়েছে। এখন বুলবুলকে বিয়ে করা ছাড়া আমার মৃত্যু ব্যতিত কোনো পথ নেই।’
তরুণীকে মারধরের বিষয়ে ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে বাড়িতে নাই। তাই এক নেতার পরামর্শে ওই মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি কোনোভাবেই ওই মেয়েকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিব না।’
মন্ডুতোষ ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী বলেন, ‘মেয়েটিকে মারধর না করতে বুলবুলের পরিবারকে বলা হয়েছে এবং গ্রামপুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া বুলবুলকে দ্রুত বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়ের পরিবারকেও আসতে বলা হয়েছে। দুই পরিবার একসঙ্গে হলে থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান মাধ্যমে শুনেছি। এরপর বিট পুলিশং কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’