বসল পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান, দৃশ্যমান ৫২৫০ মিটার
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ৮ ও ৯ নম্বর পিয়ারের ওপর আজ শনিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে বসানো হয়েছে ৩৫তম স্প্যান ‘টু-বি’। এর ফলে দৃশ্যমান হলো সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার অংশ। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানিয়েছিলেন, পরিকল্পনা থাকলেও নদীতে নাব্য সংকটের কারণে স্প্যানটি বসানো যায়নি। দিনভর ড্রেজিং করে নাব্য সমস্যা নিরসন করা হয়েছে।
এদিকে, সেতুতে বাকি থাকা ছয়টি স্প্যান মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে। এরই মধ্যে জাজিরা প্রান্তে সব স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর সেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিয়ারে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০ নম্বর পিয়ারে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বর পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ছাড়া সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৪১টির বেশি রোডস্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৫০০টির বেশি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় স্প্যানগুলো। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০মিটার অংশ।
মোট ৪২টি পিয়ারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সবকটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।