বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে দৃষ্টান্ত : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

সার্বিক উন্নয়ন ঘটিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূলে নারীর ক্ষমতায়ন অনেক প্রসার ঘটেছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ সোমবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে ইউনাইটেড নেশন্স ভলান্টিয়ার বাংলাদেশ এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা আয়োজিত ‘Inspiring Women Volunteers Award-2022' প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নারীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নানা ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার এখন নারী। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অনেক নারী সচিব আছেন। বিচারপতি, এসপি-ডিসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীরা প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এসব মাইলফলক। নারী-পুরুষের বৈষম্য নিরসনে সরকার বদ্ধপরিকর।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, দেশের নগর ও গ্রামাঞ্চলে অনেকেই স্বেচ্ছাসেবায় যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু সেগুলো বিচ্ছিন্নভাবে চলছিল। স্বেচ্ছাসেবাকে একটি প্লাটফর্মে এবং মর্যাদার স্থানে নিয়ে আসার জন্য সরকার দেশে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবা নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। যা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দিয়েছেন। এই নীতিমালা কার্যকর হলে যারা বিনা পারিশ্রমিকে নানা সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করছেন, তারা একটি মর্যাদার আসনে আসীন হবেন এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাবেন।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই নীতিমালা স্বেচ্ছাসেবা চর্চার বিষয়টিকে আরও গতিশীল করবে। যা জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন বিশেষত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে একটি কৌশল হিসেবে কাজ করবে।
মন্ত্রী বলেন, করোনার সময় ত্রাণ বিতরণ, আক্রান্ত পরিবারকে সহযোগিতা, অসুস্থদের বাসায় খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম পরিচালনাসহ জনগণকে সচেতন করতে অনেক স্বেচ্ছাসেবী নারী-পুরুষ কাজ করেছেন, কোনোপ্রকার পারিশ্রমিক ছাড়াই। ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে অনেকে বিনাশ্রমে কাজ করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবায় নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের যে কোনো দুর্যোগে, বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আকস্মিক বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বেচ্ছাসেবায় জনসাধারণের প্রবেশ ও স্বেচ্ছাসেবার চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে মিশন ও ভিশন ঠিক করেছেন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; যদি দেশের সকল স্তরের মানুষকে যুক্ত করা না যায়, তাহলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অনেক কঠিন হবে। তাই যার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসীন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেন রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ড।
উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য অনুষ্ঠানে ১৫ জন নারীকে পুরস্কৃত করা হয়।