বাবা-মা-বোনকে হত্যায় মেহেজাবিন রিমান্ডে
রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকায় বাবা-মা ও বোনকে হত্যামামলায় মেহেজাবিন মুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) শওকত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিআরও আরও জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পরিদর্শক জাকির হোসাইন আসামিকে হাজির করে সাতদিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক চারদিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে হত্যামামলাটি করেন হত্যার শিকার মাসুদ রানার বড়ভাই ও মেহেজাবিন মুনের চাচা সাখাওয়াত হোসেন। মামলায় মেহেজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্যকেও আসামি করা হয়েছে। অরণ্য রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
গতকাল শনিবার সকালে কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে মাসুদ রানা (৫০), তাঁর স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (৪৫) এবং তাঁদের মেয়ে জান্নাতুলের (২০) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয়েছে মাসুদ রানার আরেক মেয়ে মেহেজাবিন মুনকে।
ঘটনাস্থল থেকে মেহেজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও তাদের পাঁচ বছরের মেয়ে মার্জান তাবাসসুমকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতের কোনো একসময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
‘তিন খুন করেছি, আরও দুজনকে করে ফেলতে পারি’
পুলিশ দাবি করেছে, মেহেজাবিন মুন গতকাল শনিবার সকালে জরুরি নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের খবর জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
বিষয়টি উল্লেখ করে কদমতলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “মেহেজাবিন পুলিশকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমি আমার বাবা-মা এবং বোনকে খুন করছি। আরও দুজন অসুস্থ আছে। তাদেরকেও খুন করতে পারি। আমাকেও খুন করে ফেলতে পারি। আপনারা আসেন। আমাকে ধরেন।’ এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন আর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
কেন এই হত্যাকাণ্ড, মেহেজাবিন কী জানিয়েছেন- এমন প্রশ্নে এসআই আবুল কালাম বলেন, ‘প্রথমে তো শুনেছিলাম পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। পরে মেহজাবিন জানান, জমিজমা ও টাকা-পয়সার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। তবে এটাই শেষ কথা নয়, এখন অনেক ধরনের কথা আসামি বলতে পারেন। আমরা সবকিছু সতর্ক থেকে শুনছি।’
‘মেহেজাবিনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার তদন্তে গিয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত জেনেছি, তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে শ্বাসরোধ করে। এর আগে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়েছিলেন মেহেজাবিন। প্রত্যেকের গলায় দাগ রয়েছে। আমাদের ধারণা, গলায় কিছু পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে’, যোগ করেন এসআই।