বাল্যবিবাহ : কাজির জেল, বরকে জরিমানা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/12/03/kazi-rehan.jpg)
আয়োজন সব ঠিকঠাক। একটু পরেই কবুল পড়িয়ে সম্পন্ন হবে বিয়ে। বিয়ের সাজে আসরে উপস্থিত বর মো. রুবেল হোসেন (২১)। কনে বৃষ্টি আক্তারও বিয়ের সাজে বরের পাশে। সময়টা গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টা। স্থান দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন গ্রাম।
কাজি রেহান রেজা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বর-কনের টিপসই নিয়ে বিয়ে পড়ানোর প্রহর গুনছেন। এমন সময় বিয়ের আসরে পুলিশ নিয়ে হাজির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার।
পুলিশ গ্রেপ্তার করেন কাজীকে। কারণ কনে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। বাল্যবিবাহ পড়ানো ও নিকাহনামা রেজিস্ট্রেশন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কাজিকে দেওয়া ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ। আর বর রুবেলকে করা হয় দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড।
সাজার দণ্ডপ্রাপ্ত নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজি) রেহান রেজার (৪৭) বাড়ি উপজেলার চেংমারী গ্রামে। তিনি খানপুর ইউনিয়নের কাজি হিসেবে কাজ করেন। অন্যদিকে বর রুবেলের বাড়ি নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ইউএনও। তার উপস্থিতি টের পেয়ে কাজি দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন। এদিকে বরের পাশে কনে সেজে বসে পড়েন মেয়ের ভাবি। তিনি দেখতে পান বিয়ের জন্য নিকাহ্ রেজিস্ট্রারে লেখা প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিষয়টি ইউএনওর সন্দেহ হলে তখন তাদের আটক করা হয়। পরে বাল্যবিবাহের আয়োজনের দায়ে কাজিকে সাজা ও বরকে জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি আক্তারের বিয়ের খবরে পেয়ে বিয়ে বাড়িতে যাই। এ সময় পাত্র রুবেল হোসেনকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর কাজি রেহান রেজাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রীর ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে।