বিএনপির সঙ্গে আর আলোচনায় বসার ইচ্ছে নেই : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি ও তার মিত্রদের সঙ্গে আর আলোচনায় বসার ইচ্ছে নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা জানান। আজ সোমবার (১ মে) মার্কিন গণমাধ্যমটি ওই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ও তার মিত্রদের সঙ্গে আর আলোচনায় বসার ইচ্ছে নেই। ভোট কারচুপির যে কালচার, সেটা বিএনপিই শুরু করেছে। এ দলটির প্রতিষ্ঠাতা একজন মিলিটারি ডিক্টেটর। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে আমাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে।’
দেশ ও দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো সরকার কাজ করেনি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে দেশের মানুষের কল্যাণে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অন্যদিকে, মিলিটারি ডিক্টেটররা শুধু তাদের নিজেদের উন্নয়নেই কাজ করেছে।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সাংবাদিক হয়রানির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সব দেশেই আছে। পৃথিবীর সব দেশে ডিজিটাল আইন যেভাবে আছে, আমাদের দেশে একইভাবে আছে। এখানে সাংবাদিকদের হয়রানির বিষয় নয়, যে অপরাধ করে তাকেই আইনের আওতায় আনা হয়।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দলগুলোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন নেই। সেই নির্বাচনেও বিএনপি মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা অংশ না নিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। ওই সময় পাঁচশটি স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। কোনো মানুষ এটা ভাবতেও পারবে না, জীবন্ত মানুষগুলোকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে মারাই নাকি তাদের আন্দোলন। এভাবে তারা নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন বন্ধ করতে পারেনি। আমরাই আবার ক্ষমতায় আসলাম।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির নেতা কে? তাদের দলের চেয়ারপারসন তো দণ্ডিত আসামি। দ্বিতীয় নেতা দলের ভাইস চেয়ারম্যান পলাতক। তিনি এখন লন্ডনে বসে রাজনীতি করছেন। তিনি তো রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেয়ে বিদেশে গেছেন। তাহলে তাদের এখন নেতা কে? বিএনপি এখন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়েই রাজনীতি করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেশে একটা খুন হলে সবাই বিচার চায়। আমেরিকাও নিষেধাজ্ঞা দেয়। অথচ, আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিচারও চাইতে পারিনি। যখন ক্ষমতায় এসেছি, তখনই বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি। তারপরও আমি ২০১৮ সালের আগে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। বাস্তবতা হলো তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেই। পুরো কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা তো বিএনপিই নষ্ট করে দিয়েছে। খালেদা জিয়া তো নিজেই বলেছেন, দেশে পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নেই। তারপরও তারা কেয়ারটেকার সরকার চায় কীভাবে? এটাই আমার প্রশ্ন। তারপরও তাদের প্রতি আমি অনেক উদারতা দেখিয়েছি। এখন আর তাদের সঙ্গে বসা ও কথা বলার কিছু নেই।’