ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্ত, বিজিবির টহল জোরদার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত কয়েকদিনের ঘটনার পর শহরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করলেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এখনও কাটেনি। শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অনেকটা যেন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। গতকাল রোববার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে।
গত কয়েকদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে এবং পুলিশসহ আহত হয়েছে দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় সাড়ে ছয় হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে পুলিশ তিনটি মামলা করে।
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সকাল থেকেই হরতাল সমর্থকেরা বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে।
শহরের পৈরতলা, পুলিশ লাইন্স এলাকা, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক, বিশ্বরোড এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে গতকাল আরও দুজন নিহত হয়েছেন। নিহতেরা হলেন সরাইলের আলামিন ও অজ্ঞাত একজন। এ নিয়ে তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ জন নিহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, শিল্পকলা একাডেমি, জেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, আনন্দময়ী কালিবাড়ি মন্দির, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষাচত্বর, উন্নয়ন মেলাসহ বিভিন্ন সরকারি ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি হামলাকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হন।
হরতালের কারণে বন্ধ ছিল দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও মহাসড়কে ছোট-বড় এবং দূর পাল্লার যানবাহন চলাচলসহ বন্ধ ছিল রেল যোগযোগ।
ঢাকা-সিলেট, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কমপক্ষে ৪০টি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান ও পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানকে সাংবাদিকেরা বারবার ফোন করলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি।