বরিশালে সিইসিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বরিশালের হিজলা উপজেলার ২ নম্বর মেমনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদের ঘোষিত নির্বাচনি ফলাফল বাতিল চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
যুগ্ম জেলা জজ-৩ আদালতে ইউপি সদস্য পদের পরাজিত প্রার্থী আ. লতিফ মৃধা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আবেদন করেন। বিচারক মো. ইফতেখারুল ইসলাম মামলাটির আদেশ দানের বিষয়ে পরবর্তীকালে জানানো হবে বলে উল্লেখ করেছেন।
মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন—বিজয়ী ইউপি সদস্য মনির হোসেন চৌকিদার, অপর প্রার্থী দুলাল হোসেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সহকারী সচিব, বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (রিটার্নিং কর্মকর্তা), মেমানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ‘গত ২১ জুন হিজলার ২ নম্বর মেমানিয়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদে মনির হোসেন চৌকিদার ফুটবল প্রতীক, দুলাল হোসেন টিউবওয়েল প্রতীক ও আ. লতিফ মৃধা মোরগ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেন। প্রার্থীদের মধ্যে মনির হোসেন চৌকিদারের জনসমর্থন না থাকলেও অর্থশালী ও প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি কৌশলে নির্বাচনে জয়ী হতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বেআইনি ও অবৈধ উপায়ে ম্যানেজ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দিয়ে আবুল ঢালীর বাড়ির মল্লিক-ই-এবতাদায়ী মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিনকে নিয়োগ দেন। এতে আ. লতিফ মৃধা আপত্তি জানালে ১৯ জুন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে মহিষখোলা ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক কামাল উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু, ২০ জুন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে পুনরায় উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিনকে বহাল করা হয়। ফলে নির্বাচনের দিন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পুনরায় উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিন প্রকাশ্যে তাঁর প্রশাসনিক ও একদলভুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ফুটবল প্রতীকের মনির হোসেন চৌকিদারের পক্ষে কাজ করেন। তারা অন্যান্য প্রার্থীদের এজেন্টদের মারধর করাসহ তাদের কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেন। এ সময় মোরগ প্রতীকের আ. লতিফ মৃধা প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করে জখম করা হয়। পরে ফুটবল প্রতীকে সীল দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়। আ. লতিফ মৃধা আবারও প্রতিবাদ করলে দুই ঘণ্টার জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু আ. লতিফ মৃধা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। দুই ঘণ্টা পর পুনরায় জনশূন্য ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু করে একতরফাভাবে অন্যান্য প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় আ. লতিফ মৃধার ছেলে সোহাগ মৃধা নির্বাচনের সব অনিয়ম উল্লেখ করে হিজলা থানায় মামলাও করেন। আ. লতিফ মৃধার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।’ আ. লতিফ মৃধার মামলার আবেদনে নির্বাচনি ফলাফল বাতিল ও আ. লতিফ মৃধাকে নির্বাচিত ঘোষণা করার দাবিও করা হয়।