ভারতে রপ্তানিকালে ৪ টন ইলিশ জব্দ
মৌলভীবাজারের চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে ভারতে রপ্তানিকালে আটক করা হয়েছে চার মেট্রিক টন ইলিশ। সরকারি নির্দেশনার প্রথম দিন আজ সোমবার সকালে এই ইলিশ জব্দ করা হয়।
বাংলাদেশ সরকার মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহণ ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সরকারি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। তা ছাড়া দেশজুড়ে মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে মাইকিং করে এ বিষয়ে অধিকতর সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে সরকারি নির্দেশনার প্রথম দিন আজ সকালে ভারতের উত্তর ত্রিপুরায় রপ্তানির জন্য খুলনার আরিফ সি ফুড দুটি গাড়িতে করে এই ইলিশ নিয়ে আসে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে। এ অবস্থায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনার আলোকে ট্রাকবোঝাই চার মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করে।
খুলনার আরিফ সি ফুডের মালিক আরিফ হোসেন ভারতের কৈলাশহরে রপ্তানির জন্য পৃথক দুটি গাড়িতে করে এই ইলিশ নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে গতকাল স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রপ্তানির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সরকারি অনুমোদন গ্রহণ করেছিল। তবে সরকারি নির্দেশনা শুরুর প্রায় ১০ ঘণ্টা পর আজ সকালে ইলিশ মাছ নিয়ে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে আসেন আরিফ সি ফুডের মালিক আরিফ হোসেন। এ কারণে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ ট্রাকবোঝাই ইলিশ জব্দ করে। তা ছাড়া ভারতে ১০ ডলারে প্রতি কেজি ইলিশ পাঠানোর কথা থাকলেও ওই ব্যবসায়ী ছয় দশমিক এক ডলারে ইলিশ মাছ রপ্তানি করতে চান।
স্থানীয় আমদানি ও রপ্তানিকারক মুর্শেদুর রহমান সেজু বলেন, চাতলাপুর কাস্টমসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি কেজি ইলিশ ১০ ডলারের পরিবর্তে ছয় দশমিক এক ডলারে রপ্তানি করতে চান।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর গত ১ অক্টোবর থেকে এই প্রথম চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় ইলিশ মাছ রপ্তানি শুরু হয়। গত ১ ও ২ অক্টোবর ভারতের কৈলাশহরে চার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম ভারতে রপ্তানিযোগ্য চার টন ইলিশ চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে জব্দ করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (৩ অক্টোবর) যদি এ মাছ চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে এসে পৌঁছাত তাহলে বিধি মোতাবেক মাছ ভারতে রপ্তানির সুযোগ ছিল।
চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল সিংহ জানান, সরকারি নির্দেশনায় গতকাল মধ্যরাত থেকে ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহণ ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ওই ব্যবসায়ীর গতকাল পর্যন্ত ইলিশ মাছ পাঠানোর নির্দেশনা ছিল। তাই মেয়াদ না থাকায় আজ ভারতে ইলিশ পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে ইলিশবোঝাই ট্রাক ও পিকআপ গাড়ি শরীফপুর বিজিবির সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যান।