ভালুকায় শিল্পপতির পা কাটার ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার ৭
ভালুকায় আর্টি কম্পোজিটের মালিক শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাকের দুই পা কেটে ফেলার ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ওই শিল্পপতির ছেলে তৌফিকুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় এ মামলা করেন।
র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ মামলার এজারহারভুক্ত সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলাম মুন্সী ও মমিনুল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আসামি ওই কারখানার শ্রমিক রফিকুল ইসলাম মুন্সি (৫৫), মমিনুল ইসলাম (৩৫) ও শিরিনা আক্তারকে (৪০) পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
অপর দিকে গতকাল বিকালে র্যাব-১৪ অভিযান চালিয়ে রুহুল আমীন পাঠান (৪০) ও ইকবাল পাঠানকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব মামলার প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন পাঠান (৫৫) ও মাসুম মোল্লাকে (৫০) গ্রেপ্তার করে।
এলাকাবাসী জানায়, আর্টি কম্পোজিট মিলের পাশে ধোবাজান নামে একটি সরকারি খাল রয়েছে। ওই খাল নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও খালের পাশের বাড়ীর মালিক জসিম উদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে অনেক আগেই। পরে তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
ঘটনার দিন সকাল ১০টায় আব্দুর রাজ্জাক ট্রাক দিয়ে ওই খালে মাটি ভরাট করাচ্ছিলেন। পাশের বাড়ির জসিম উদ্দিন গং এতে বাধা দেন। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জসিম উদ্দিনের লোকজন আব্দুর রাজ্জাকের একটি পা কেটে ফেলেন। অপর পা ঝুলে ছিল। এ ঘটনায় ওই কারখানার শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে জসিম উদ্দিন পাঠানের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে একটি প্রাইভেট কারসহ কয়েকটি ঘর ভাঙচুর করে।
শিল্পপতির ছেলে তৌফিক রাজ্জাক মোবাইল ফোনে জানান, তার বাবার ঝুলন্ত পা অপারেশন করে কেটে ফেলা হয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মাহামুদুল ইসলাম জানান, শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দিয়েছেন। এ মামলায় এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুজনকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে আজ শুক্রবার র্যাব-১৪ ময়মনসিংহ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধিনায়ক আবু তালাত মো. নাঈম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভালুকায় শিল্পপতির দুই পা কেটে ফেলার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন পাঠান (৫৫) ও তার সহযোগী রুহুল আমিন পাঠান (৪০), ইকবাল পাঠান (৩৮) এবং মাসুম মোল্লা (৫০)। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের দেওয়া তথ্যমতে একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। গতকাল অভিযান চালিয়ে জেলার পাগলা থানার কান্দিগাঁও এবং ভালুকা থানার পারুলদিয়া ও কাঁঠালী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।