ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের ফোনালাপের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের সঙ্গে অভিভাবক ফোরামের এক নেতার ফোনালাপের ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্য হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে ঢাকার মিরপুরের দুয়ারীপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে প্রেষণে ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। দুজনের ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের এই ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
ফোনালাপের একপর্যায়ে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যেমন শিক্ষক, তেমনি রাজনীতি করা মেয়ে। আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। ব্যাগে পিস্তল রাখি। কেউ (কোনো... বাচ্চা) যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব। আমি শুধু ভিকারুননিসা না, আমি তাকে দেশ ছাড়া করব।’
অধ্যক্ষের এমন ফোনালাপে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে বিব্রত হয়েছেন ভিকারুননিসার সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।
এদিকে ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপের অডিওকে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ। দুর্নীতি করতে না দেওয়ায় অভিভাবক ফোরামসহ কিছু লোকজন তাঁর পেছনে লেগেছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
অধ্যক্ষ কামরুন নাহার সোমবার তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে ধারণ করে রাজপথে মিছিল মিটিং করা সংগ্রামী নারী। মাননীয় নেত্রীর পাশে থেকে সত্যের পক্ষে লড়াই করেছি। তিনি আমার বোন, মা, নেত্রী তথা অভিভাবক। কোন নোংরা ষড়যন্ত্র আর অসততার কাছে মাথা নোয়াতে শিখিনি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারী ভিকারুন নিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রীদের সুযোগ্যভাবে গড়ে তোলাই আমার একমাত্র ব্রত।
যাঁরা নিজের স্বার্থে আঘাত লাগার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে আমার পেছনে লেগে আছেন কিছু না পেয়ে এডিট করে তাঁরা একটি অডিও ছেড়েছেন, যা সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
সন্তানতুল্য কন্যাদের জন্য আর তাঁদের নির্বিঘ্নে সুস্থ পরিবেশে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য কেবলই চিন্তা আর আকুলতা।
একদিন রাজপথে নিজের জীবন বাজি রাখা আমি কোন কিছুতেই ভীত নই, জীবন থাকতে কিছুতেই স্কুলের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে দিবো না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আমার এই লড়াইয়ে সতীর্থ আপনাদের পাশে চাই।
সবার জন্য শুভকামনা।’