মাকে হত্যার ৪ বছর পর ছেলে গ্রেপ্তার
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/11/02/pbi.jpg)
চার বছর পর উন্মোচিত হলো নীলফামারী জেলার ডিমলায় চাঞ্চল্যকর জাহানার বেগম (৭২) হত্যার রহস্য। হত্যার দায়ে তারই ছেলে আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত সোমবার প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।
রংপুর জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার রুপাহারা গ্রামের মৃত আতাউর রহমান আতা মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে (৭২) ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তার মেয়ে নাজমা বেগম। এর পর প্রথমে তাকে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট জাহানারা বেগম মারা যান।
এ ঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল নিহতের মেয়ে নাজমা বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই রংপুরে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ পরিদর্শক যতীন্দ্রনাথ শর্মা মামলার তদন্ত শুরু করেন।
এসপি জাকির জানান, তদন্তকালে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়, জাহানারা বেগম ভরণপোষণ দেওয়ার শর্তে তার নিজ নামীয় ১৭ শতক জমি ছেলে তারা মিয়া এবং ২০ শতক জমি আরেক ছেলে আবদুর রহিমকে রেজিস্ট্রি করে দেন। জমি লিখে নেওয়ার পর আব্দুর রহিম মায়ের ভরণপোষণ দিচ্ছিলেন না। এসব নিয়ে মায়ের সঙ্গে রহিমের প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো।
ঘটনার দিন রাতে জাহানারা বেগমের কানে আসে, তার দেওয়া ২০ শতক জমি রহিম বিক্রি করার জন্য দেনদরবার করছেন। তখন জাহানারা রহিমকে জমি বিক্রি করতে নিষেধ করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রহিম কাঠের ফালি দিয়ে জাহানারার মাথায় আঘাত করেন। এরপর পালিয়ে যান।
এসপি জাকির বলেন, ‘তদন্তে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর রহিমকে ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু করি আমরা। গত সোমবার প্রযুক্তি ব্যবহার করে আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহিম তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
পিবিআই পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘এটি ক্লুলেস মামলা ছিল। আমরা সেই ক্লু বের করে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’