মামুনুলের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নানা অভিযোগের ‘সুস্পষ্ট প্রমাণের’ ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ। আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক তাঁর তিন বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন।
রোববার রাতে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক তাঁর তিন বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন কিন্তু কাবিন নেই। এ বিষয়ে আমরা আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করব তাঁকে।’
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে তাঁকে (মামুনুল হক) ডিবিতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা হস্তান্তর করিনি। ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় করা ভাঙচুরের মামলায় আগামীকাল সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে। আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
এর আগে আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আপনারা বেশ কিছুদিন যাবৎ সারা দেশে হেফাজতের তাণ্ডব দেখেছেন। সরকারি স্থাপনাসহ থানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া আমাদের মোহাম্মদপুর থানায়ও একটি ভাঙচুরের মামলা ছিল। আমরা মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলাটির তদন্ত করছিলাম। আমরা কনফার্ম হয়েছি যে, এই মামলার সঙ্গে তিনি (মামুনুল হক) জড়িত। ওই ঘটনা মামুনুল হক জানেন এবং তিনি স্বীকারও করেছেন।’
উপকমিশনার বলেন, ‘এ ছাড়া পল্টন থানাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অধিকাংশ মামলা মামুনুল হককে আসামি করা হয়েছে। তিনি উসকানিমূলক বক্তব্যও দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে হামলা করেছে। এসব ঘটনার পরে আমরা তাঁকে নজরদারিতে রেখেছিলাম। এখন সমস্ত ঘটনার অভিযোগের ব্যাপারে ও আমাদের মোহাম্মদপুর থানায় মামলার ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে, আমরা শুনেছি সেসব মামলায়ও তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের মামলাটি হয়েছিল ২০২০ সালে। সেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এখন তাঁকে (মামুনুল হক) তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে আগামীকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।’
এর আগে দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে বাইতুল মোকাররম মসজিদে নাশকতা ও তাণ্ডবের ঘটনার মামলার আসামি মামুনুল হক। এ তাণ্ডবের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে মামুনুল হক অন্যতম। শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরের ঘটনার মামলারও আসামি তিনি।’
তেজগাঁও বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টের ঘটনায় পর মামুনুল হক ওই রাতেই ঢাকায় চলে আসেন। মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসা থাকলেও তিনি সেখানে না গিয়ে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন।