মায়ের লাশ শনাক্তের আশায় খুলনা থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছেন মরিয়ম
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বহরদার বাজারে গত ১০ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় নারীর বস্তাবন্দি গলিত লাশ উদ্ধার হয়। এদিকে খুলনায় নিখোঁজ রহিমা খাতুনের (৫২) মেয়ে মরিয়ম মান্নান জানিয়েছেন, ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি তাঁর মায়ের।
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি খবর পেয়েছেন এবং আলামত দেখে মরদেহ শনাক্তে আশায় তিনি ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মায়ের লাশ শনাক্তের উদ্দেশে মেয়েরা আসছেন, তারা জয়দেবপুরে রয়েছেন বলে ফোনে জানিয়েছেন।
ফুলপুর থানা পুলিশ জানায়, ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামত সংরক্ষণ করে উদ্ধারের দুদিন পর লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করেছে তারা।
প্রায় এক মাস আগে গত ২৭ আগস্ট খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকার খানাবাড়ি থেকে নিখোঁজ হন গৃহবধূ রহিমা খাতুন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, 'গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর লাশ উদ্ধার হয়। ওই থানার ওসি আমাদের জানিয়েছেন, বয়স ৩২ উল্লেখ করে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়েছে। তবে তার ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করেছে পুলিশ। আমরা নিশ্চিত নই যে, ফুলপুরে যে নারীর লাশ পাওয়া গেছে তিনিই রহিমা খাতুন কিনা।’
ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে থানার বহরদার বাজারে অজ্ঞাত নারীর বস্তাবন্দি লাশ তারা উদ্ধার করা হয়। তাঁর বয়স ৩০ বছরের বেশি হবে। দুদিন পর ১২ সেপ্টেম্বর লাশটি দাফন করেছি। তবে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা করা হয়েছে। ওই নারীর মেয়ে মরিয়ম রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে কল করে বলেছেন তিনি সকালে থানায় এসে পোষাকসহ অন্যান্য আলামত দেখবেন। যদি পোশাক দেখে মেয়েটি বলে এগুলো তাঁর মায়ের। তাহলে চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে আমরা মেয়েকে দিয়ে ডিএনএ টেস্ট করাতে পারি।’
রহিমা খাতুন নিখোঁজের পর দৌলতপুর থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে ২৮ আগস্ট অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার। এ মামলায় ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।
রহিমা খাতুনের তিন মেয়ে নিখোঁজ মায়ের সন্ধান চেয়ে ৩১ আগস্ট খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন। সেখানে মেয়েরা বলেন, তাদের বাড়ি ও জমি দখলের জন্য একটি মহল অনেকদিন ধরে তৎপর রয়েছে। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে রহিমা খাতুনকে গুম করা হয়েছে। মায়ের উদ্ধারের দাবিতে পুলিশ ছাড়া র্যাবের কার্যালয়েও গিয়েছিলেন তারা।