মিতালী এক্সপ্রেস এর বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু, ট্রেন যাবে জলপাইগুড়ি
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছে। ট্রেনটি সপ্তাহে দুদিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন থেকে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত চলাচল করবে।
আজ বুধবার বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। নয়াদিল্লি থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটির ভার্চুয়াল ‘ফ্ল্যাগ অফ’ করেন দুই দেশের রেলমন্ত্রী।
মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধনের পর টুইট করেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি তাঁর টুইটে এ পদক্ষেপকে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যের পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে ভাগ করে নেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন।
বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী এক সপ্তাহের সরকারি সফরে শনিবার ভারতে যান। ট্রেন উদ্বোধন করা ছাড়াও, মন্ত্রী লখনৌ, বারানসী, রায়বেরেলি এবং তুঘলকাবাদ সফর করবেন। এ ছাড়া সেখানকার কিছু রেল কোচ কারখানা পরিদর্শন করবেন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে ৫১৩ কিলোমিটার যেতে ট্রেনটির সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। এটি একটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত হবে এবং এতে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন কোচ এবং চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার বগি থাকবে।
ভারতের উত্তর রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিপিআরও) মিডিয়াকে জানান, ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ উত্তর পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পৌঁছাবে।
এটি ভারতের দিকের শেষ স্টেশন হলদিবাড়িতে এবং বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য ১০ মিনিটের বিরতি দেবে। এ ছাড়া এটির আর কোনো বিরতি নেই।
সিপিআরও জানান, ফিরতি যাত্রার সময় মিতালি এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুদিন সোম ও বৃহস্পতিবার, ঢাকা সেনানিবাস থেকে নিউ জলপাইগুড়ি চলবে। এটি ঢাকা সেনানিবাস থেকে রাত ২১টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে।
ভারতের রেল সূত্র জানায়, ট্রেনটি বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে চিলাহাটি (বাংলাদেশ) পৌঁছাবে। এটি সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে চিলাহাটি থেকে ছাড়বে। ট্রেনটি ভারতীয় সময় সকাল ৬টায় হলদিবাড়ি (ভারত) পৌঁছাবে ও হলদিবাড়ি থেকে ৬টা ৫ মিনিটে ছাড়বে এবং ভারতীয় সময় ৭টা ১৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে। এই যাত্রার জন্য নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এবং কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনের বিদেশি যাত্রী সংরক্ষণ ব্যবস্থা কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।
এদিকে, অন্য দুটি ইন্দো-বাংলাদেশ যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস যাদের কার্যক্রম কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে ব্যাহত হয়েছিল, রোববার তাদের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা মৈত্রী এক্সপ্রেস ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভাগ করার পর থেকে দুটি দেশের মধ্যে চালানো প্রথম ট্রেন। বন্ধন এক্সপ্রেস সেই বছরের পরের দিকে যাত্রা শুরু করে। করোনার কারণে দীর্ঘ ২৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৯ মে থেকে দুই দেশের মধ্যে আবার মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আজ চালু হলো তৃতীয় ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস।