মৃত কন্যাশিশু নিয়ে ধর্ষকের বিচার চাইল স্কুলছাত্রী
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার ধর্ষণের ফলে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং প্রসবের দুই দিন পর শিশুটি মারা যায়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে প্রায় নয় মাস আগে বিয়ের প্রলোভনে কয়েক দফা ধর্ষণ করে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. রায়হান। মো. রায়হান দেওয়ানগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের ছাত্র। ধর্ষণের ফলে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্কুলছাত্রীর বাবা তাঁর মেয়ের জন্য এলাকাবাসীর কাছে বিচার চান। ওই সময় রায়হানের বাবা স্কুলশিক্ষক হাবিবুর রহমান মেয়েটির গর্ভের সন্তান প্রসবের পর দুজনের বিয়ে সম্পন্ন করাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এমনকি স্কুলছাত্রীর বাবাকে ধর্ষণের ঘটনাটি গোপন রাখার অনুরোধ করেন।
এরই একপর্যায়ে গত ১৯ নভেম্বর রাতে নির্যাতনের শিকার মেয়েটি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করে। এরপর কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতক শিশু ও তার মায়ের শারীরিক অবস্থা গুরুতর দেখে ওই রাতেই তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে মেয়েটির স্বজনরা ওই রাতেই নবজাতক শিশু ও তার মাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। দুইদিন পর ২১ নভেম্বর মধ্যরাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি হাসপাতালেই মারা যায়। পরে মেয়েটির বাবা রায়হানের বাবার কাছে তার মেয়ের বিয়ে ও সুচিকিৎসার দাবি জানালে স্কুলশিক্ষক হাবিবুর রহমান কিছুই করতে পারবেন না বলে জানান। ঘটনার পর থেকে রায়হান ও তার বাবা হাবিবুর রহমান পলাতক রয়েছেন।
শুক্রবার মৃত কন্যাশিশুসহ ওই স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা বিচারের আশায় দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহ নেওয়াজ শাহান শাহের বাসায় যায়। পরে পৌর মেয়র দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন করে এই ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নিতে বলেন।
স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে খুবই সহজ সরল। এই সরলতার সুযোগে আমার মেয়েটির জীবন যে লম্পট শেষ করেছে আমি তার শাস্তি চাই। আমার মেয়েটির শারীরিক অবস্থাও ভালো না।’
দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি এমএম মইনুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার একটি মৃতশিশু কোলে নিয়ে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থানায় মামলা করতে আসে। এ ব্যাপারে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। আলামত সংগ্রহের জন্য মৃতশিশুটিকে সংরক্ষণের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জামালপুর প্রতিনিধি