মেয়র ও ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাতে চান জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ঢাকার চারপাশের নদ–নদী দূষণের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এ সভার আয়োজন করে।
মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন ঢাকা শহরের মানুষ ৫০ লাখ কেজি মল ও ১৫০ কোটি লিটার মূত্র উৎপাদন করে। ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব ছিল এগুলো শোধন করা, কিন্তু এগুলো সিটি করপোরেশনের পানি নিষ্কাশন নালার মাধ্যমে নদ–নদীতে গিয়ে পরে।
পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ওয়াসার এই ব্যর্থতার কারণে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চান তিনি।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় খাল পরিদর্শনের উদাহরণ টেনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, খালের ময়লা-আবর্জনা যাতে নদীতে গিয়ে না পড়ে, সে জন্য খালের মুখে নেট দিতে বলা হয়েছিল। উত্তর সিটি করপোরেশন এখনো সে কাজ করেনি।
এ জন্য করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধেও তিনি একই ধরনের শাস্তির কথা বলেন।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ওয়াসার এমডি, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রকে মোবাইল কোর্টের সম্মুখীন করব আমরা, চাইব যেন তাঁদের ছয় মাসের জেল, চার লাখ টাকা জরিমানা হয়।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার খালগুলোর অবস্থাও এখন ভালো নয়। কিন্তু অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বরং দক্ষিণের মেয়রকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।
ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, খালের দূষিত পানি যাতে নদীতে গিয়ে না পড়ে সে জন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র খালের মুখে বর্জ্য শোধনাগার করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
সভায় নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী ও পরিবেশ নিয়ে এখন কিছুটা রাজনীতি হচ্ছে। নদী ও পরিবেশ নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।
ঢাকার চারপাশের নদ–নদী রক্ষায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় যথাযথ চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদ–নদী অবৈধ দখলের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি দখলমুক্ত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ কাজটি ভালোভাবে করেছে। ঢাকার চারপাশের নদ–নদীকে ঘিরে যে চ্যালেঞ্জ, সেই চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে হবে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডির নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।