মোংলায় জলাবদ্ধতা নিরসনে অবৈধ বাঁধ অপসারণ করলো প্রশাসন
মোংলায় সরকারি রেকর্ডীয় খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ কাজ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে এ বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।
কালিকাবাড়ী খালে বাঁধ থাকায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকায় সিলেটের মতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ বাঁধ কাটায় সাধারণ মানুষের জলাবদ্ধতার নিরসন হবে।
বাঁধ অপসারণে এ অভিযানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদারের সঙ্গে রয়েছেন কোস্ট গার্ড, পুলিশ, আনসারসহ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ইউএনও কমলেশ মজুমদার জানান, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৫৫টি সরকারি রেকর্ডীয় খাল রয়েছে। প্রতিটি খালে এক বা একাধিক বাঁধ দিয়ে চিংড়িঘের করে আসছিল স্থানীয় জমি ও ঘেরমালিকরা। আজ সকাল থেকে ওই সব খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমেই চাঁদপাই ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী, তারপর কাঁঠালতলা খালের বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব বাঁধই অপসারণ করা হবে বলেও জানান তিনি। ৫৫টি খালে প্রায় শখানেক বাঁধ রয়েছে।
কালিকাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শংকর বৈদ্য বলেন, বাঁধ অপসারণ করায় আমরা গ্রামবাসী ইউএনও স্যার ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এতদিন আমরা জলাবদ্ধতায় ছিলাম, খুব কষ্ট হতো। এখন পানি নিষ্কাশন হবে, আমরা উপকৃত হবো।
একই গ্রামের অনিল মণ্ডল বলেন, খাল আটকা থাকায় আমাদের ধান ও মাছ কোনোটাই হচ্ছে না। বিলে পানি ভরা ঘাসও নেই, গরু-ছাগল পুষতে পারি না। খাল কাটায় উপকার হবে, জমিতে পানি ওঠানামা করবে, জলাবদ্ধতা থাকবে না।
স্থানীয় খুকু মণ্ডল বলেন, এক দুটি খালের বাঁধ কাটা হচ্ছে, সব কাটতে পারবে না। এখানে টাকা-পয়সার খেলা। অনেকদিন ধরেই এসব হয়ে আসছে। এখন কেটে দিয়ে যাচ্ছে, দু-একদিনের মধ্যে এতে আবারও বাঁধ দিয়ে দেবে প্রভাবশালীরা।
চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলাম বলেন, খালে বাঁধ থাকায় পানি নামতে না পারায় কালিকাবাড়ী এলাকাজুড়ে সিলেটের মতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ এলাকার দুটি খালের বাঁধ কাটায় এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাবে কয়েক গ্রামের মানুষ।
ইউএনও কমলেশ মজুমদার বলেন, সরকারি খালে যারা বাঁধ দিয়ে রেখেছেন তাদের তা অপসারণে এক মাস আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা তা না করায় আমরা তা কাটতে মাঠে নেমেছি। এখানে কাউকে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। সব বাঁধ অপসারণ করে খাল উন্মুক্ত রাখা হবে।