মৌলভীবাজারে অপহৃত ব্যবসায়ী উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
মৌলভীবাজারে জেলা পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের যৌথ অভিযানে অপহরণের ৫৫ ঘণ্টা পর অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বড়লেখার বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গল থেকে ওই ব্যবসায়ী উদ্ধার এবং দুজন অপহরণকারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ইসমাইল আহমেদ হারুন (১৯), জুলমান আহমেদ (৩২), সবুজ হোসেন (৩০)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার বোবারথলে (ষাটঘড়ি) এলকায়।
এ ঘটনায় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটের ভাড়া বাসার উদ্দেশে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রওনা হন শশাঙ্ক কুমার দত্ত। তিনি বিয়ানীবাজারে গিয়ে আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠেন। বিয়ানীবাজারের মোল্লাপুর রাস্তায় পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস তাঁর অটোরিকশার গতিরোধ করে। পরে মাইক্রোবাসে তুলে তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
পরে অপহরণকারীরা বিভিন্ন ভিওআইপি নম্বর থেকে তাঁর ছোট ভাই সুবোধ কুমার দত্তের মোবাইলে কল করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ছোট ভাই এ বিষয়ে থানায় আইনগত সহায়তা চান্। এরপর পরই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে যৌথ উদ্ধার অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল দিবাগত মধ্যরাত দেড়টায় বড়লেখার বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গল থেকে অক্ষত অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুই অপহরণকারী, ওই এলাকা থেকে এক সন্দেহভাজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে অবস্থান নিয়ে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাদেক কাউছার দস্তগীর, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথসহ বড়লেখা থানার অফিসার ফোর্স এবং জেলা গোয়েন্দা টিম ও র্যাবের একটি দল।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অপহৃত ব্যক্তিকে যে ঘরে আটকে রাখা হয়, তা কৌশলে শনাক্ত করে জেলা পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের যৌথ টিম। এরপর তারা নিরাপদ দূরত্বে থেকে ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভিকটিমকে নিয়ে অপহরণকারী সাত-আটজন বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় যৌথ টিম তাৎক্ষণিক অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।