মৌলভীবাজারে গণটিকা : দুপুরের মধ্যে টিকার বরাদ্দ শেষ
মৌলভীবাজার জেলার পাঁচটি পৌরসভা ও ৬৭টি ইউনিয়নের ১১২টি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকা কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে মৌলভীবাজার পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজ কেন্দ্রে গণটিকার আয়োজন করা হয়। এখানে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।
মৌলভীবাজার পৌরসভার উদ্যোগে ও সিভিল সার্জন অফিসের সহযোগিতায় পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মুহিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ।
একদিনের গণটিকা কার্যক্রমে মানুষের মধ্যে এতই আগ্রহ ছিল যে আজ সকাল ৯টার আগেই কেন্দ্রে টিকাগ্রহণকারীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। অনেক কেন্দ্রে দেখা যায় বরাদ্দকৃত টিকারা চেয়ে টিকা গ্রহণকারীর উপস্থিতি ছিল দ্বিগুন।
মৌলভীবাজার সদর পৌরসভাসহ পাঁচটি পৌরসভার ৪৫টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ ডোজ টিকা বরাদ্দ ছিল। এসব কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে বরাদ্দ শেষ হয়ে যায়।
এছাড়াও জেলার ৬৭টি ইউনিয়নে ৬৭ কেন্দ্রে একইভাবে আগ্রহ নিয়ে সকাল ৯টার আগেই উপস্থিত হন টিকা গ্রহণকারীরা। এসব ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে ৬০০ ডোজ টিকা বরাদ্দ ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে বরাদ্দ শেষ হয়ে যায়। কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে স্বেচ্ছাসেবকদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। কেন্দ্রে এসে যারা টিকা দিতে পরেননি তাদের মধ্যে ছিল প্রচণ্ড ক্ষোভ।
মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান জানান, গণটিকার সফলতা আনতে পৌরসভার কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষদের নিয়ে বৈঠক করেন। মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচারণা করেন গণটিকা কেন্দ্রে আসার জন্য। পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে এক হাজার ৮০০ ডোজ টিকা বরাদ্দ ছিল, তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল, টিকা থাকলে প্রতিটি কেন্দ্রে আরও অন্তত চার হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া যেত। কেন্দ্রগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের উপস্থিতি বেশি ছিল।
সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গণটিকা কার্যক্রমের জন্য মৌলভীবাজার জেলায় ৪৮ হাজার ৮০০ ডোজ টিকা বরাদ্দ (সিনোফার্ম) আসে। জেলায় একদিনের জন্য এ কার্যক্রম ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে ১১২টি কেন্দ্রের বরাদ্দকৃত টিকা শেষ হয়ে যায়। বরাদ্দ শেষ হওয়ায় অনেকেই গণটিকা কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দিতে পারেননি। টিকার বরাদ্দ ও সরকার থেকে সিদ্ধান্ত এলে আবারও গণটিকা শুরু হবে।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১৫টি কেন্দ্র তিনি পরিদর্শন করেন।
মৌলভীবারেরর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘আগ্রহ নিয়ে সকাল থেকে করোনার টিকা নিতে কেন্দ্রে নারী-পুরুষ আসেন।’
জেলা প্রশাসক সকাল থেকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা, সদর পৌর পৌরসভা ও কমলগঞ্জ উপজেলার ১১টি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসব কেন্দ্রসহ জেলার সব কেন্দ্রে মানুষের উপস্থিতি দেখতে পান। কেন্দ্রগুলোতে টিকার বরাদ্দের চেয়ে উপস্থিতি বেশি ছিল।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, জেলা পুলিশ, আনসার, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন ও মেম্বার, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগসহ গণমাধ্যম কর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গণটিকায় সফলতা অর্জন হয়েছে। আগামী ১৪ আগস্ট গণটিকার কার্যক্রম এ জেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় আবারও অনুষ্ঠিত হবে।