মৌলভীবাজারে ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু
মৌলভীবাজার জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চারজন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে ছয়জনসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের ও করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কমলগঞ্জ উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে দুইজন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে কুলাউড়ায় এক পল্লিচিকিৎসক করোনায় মারা গেছেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা পজিটিভ নিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্বাশা আবাসিক এলাকার মৌসুমী বৈদ্য (৩০) মারা যান। করোনা উপসর্গ নিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার মাইজদি এলাকার দিলারা বেগম (৬০), সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পৈলনপুর এলাকার আশিকুর রহমান (৭৫) ও একই এলাকার রফিক মিয়া (৮৫) মারা যান। ওই চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ফয়ছল জামান।
করোনা শনাক্তের পর কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জালালপুর গ্রামের হারুন-অর রশীদ (৪৫) ও আলীনগর ইউনিয়নের যোগিবিল গ্রামের আমেনা বেগম (৬৫) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
করোনায় মৃত্যুবরণকারী ছোট বোন আমেনা বেগমকে দেখতে এসে করোনার উপসর্গ থাকা বড় বোন সবজান বিবি (৭০) গতকাল সোমবার সকালে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমেনা বেগম মারা যান। করোনার উপসর্গ নিয়ে তাঁকে দেখতে এসে তাঁরই বড় বোন মারা গেছেন। সোমবার বিকেলে দুই বোনের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আলাউদ্দীন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী শওকত আলী (৬২) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া জানান, করোনা শনাক্ত ও উপসর্গ নিয়ে পাঁচজন মারা যাওয়ার কথা শুনেছেন। তবে এদের মধ্যে দুইজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দিয়ে করোনা শনাক্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকি তিনজন করোনার নমুনা এখানে দেননি।
কুলাউড়ার উত্তর কুলাউড়া এলাকার পল্লী চিকিৎসক জালাল উদ্দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট নর্থইস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০টি নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুযায়ী আক্রান্তের হার ৩৭.১৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত জেলায় চার হাজার ৪৩৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ১২০ জন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৬৮ জন।
সরকারি হিসাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৭ জন। তবে করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বেসরকারি হিসাবে জেলার বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৯ জন।