ময়মনসিংহে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ১
ময়মনসিংহে ছাত্রলীগের নয়টি ইউনিটের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একজন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর টাউন হল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে এই ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
কমিটি ঘোষণার পর জেলাজুড়ে পদ বঞ্চিতরা এবং নবগঠিত ছাত্রলীগের কমিটির সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কমিটি দেওয়ার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ করেন পদবঞ্চিতরা। এ নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজ নিজ বক্তব্য দিয়েছেন বঞ্চিত ও পদ পাওয়াসহ ছাত্রলীগের নেতারা।
জানা গেছে, গত ৩ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি স্বাক্ষরিত ময়মনসিংহ সদর, ফুলবাড়ীয়া, গৌরীপুর, ত্রিশাল, ত্রিশাল পৌর, ভালুকা, মুক্তাগাছা, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ও ঈশ্বরগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আজ দুপুরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দুপক্ষ একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে এবং পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয়। বিকেলে নগরীর টাউন হলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এদিকে, কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে মুক্তাগাছা ও গৌরীপুর উপজেলায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন গ্রুপের সমর্থক ও আনন্দ মোহন সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছর পর কমিটি দেওয়ায় আমরা ক্যাম্পাসে নেতাকর্মীরা একসঙ্গে স্লোগান দিচ্ছিলাম। কেউ পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চাইলে সাধারণ ছাত্ররা প্রতিহত করবে।’
এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সমর্থক ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহফুজুল আলম ফাহাদ বলেন, ‘আমরা মুখোমুখি অবস্থানে নেই। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেওয়ায় তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যাহার আদেশ বাতিল করে আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্বহাল আমরা চাই না।’
এ বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভ দে বলেন, ‘ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কোনো কমিটি দিতে পারেন না।’ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি নিজ পদে বহাল হওয়ার পরও তাড়াহুড়া করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও সভাপতি আল আমিন নয়টি কমিটি দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়ম বর্হিভূত।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন বলেন, ‘আমরা অবৈধ কোনো কমিটি দেইনি। হুমায়ুন কবির ৬ তারিখে পদ ফিরে পেয়েছেন। আমরা ২ তারিখ থেকে ৫ তারিখ রাত ১২টার আগেই কমিটি ঘোষণা করেছি। আর্থিক সুবিধা নিয়ে কমিটি দিয়েছি—কেউ যদি তা প্রমাণ করতে পারে তাহলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ টাউন হল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।