ময়মনসিংহে শুভ্র হত্যার মাস্টারমাইন্ড খালাসে হতাশ পরিবার
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যার রায় নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় অখুশি বলে জানিয়েছেন নিহতের চাচা কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা উপকমিটির সদস্য মোরশেদুজ্জামান সেলিম।
তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্রকারী ও নির্দেশদাতাকে খালাস দিয়ে প্রদত্ত আদালতের রায়ে পরিবারের সবাই অখুশি। আটজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী মূল আসামি গৌরীপুরের মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের নির্দেশে মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশ ও আদালতকে জানিয়েছেন। মাসুদুর রহমান শুভ্র গৌরীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে তাঁকে হত্যা করেন বর্তমান মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। আমরা মেয়রের শাস্তি চাই। তাই আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’
তিনি আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় টেলিফোনে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এর আগে আজ সকালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মনির কামাল ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্রকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাত জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আরও তিন জনকে।
এর আগে ৬ অক্টোবর আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়। এ মামলার আসামি ছিলেন গৌরীপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, তাঁর দুই ভাইসহ ১৯ জন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মইলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াদ উজ্জামান রিয়াদ, গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ রেজা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোজাম্মেল হক, খাইরুল ইসলাম, মাঈন উদ্দিন, রুহুল আমিন ও শরীফুল ইসলাম নাঈম।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মাসুদ পারভেজ কার্জন, ছাত্রদলকর্মী শরীয়তউল্লাহ ওরফে সুমন ও যুবদলকর্মী রাসেল মিয়া।
মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে বাকিদের খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- গৌরীপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, ছোট ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম, সৈয়দ মাজাহারুল ইসলাম জুয়েল, ছাত্রদলকর্মী রিফাত, মো. আবু হানিফা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলকর্মী মজিবুর রহমান, কামাল মিয়া ও শাজাহান মিয়া।
২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৌরীপুর মধ্যবাজার পান মহালে শুভ্রকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে নিহতের ছোটভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় হত্যা একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অধিগ্রহণ করে। তদন্ত শেষে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ কামাল আকন্দ গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র ও তাঁর দুই ভাইসহ ১৯ জনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র জমা দেন ময়মনসিংহের একটি আদালতে।
উল্লেখ্য, শুভ্র হত্যার ঘটনার পর গৌরীপুরের মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে একটি সরকারি গাড়িসহ তাঁর ব্যক্তিগত কোটি টাকার ক্ষতি হয়।