রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবি : তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহীর পবা উপজেলার হারুপুর নবগঙ্গা এলাকায় পদ্মা নদীতে ১৩ যাত্রীসহ নৌকাডুবির ঘটনায় দুই নৌকামালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নগরীর দামকুড়া থানায় রাজশাহী নৌপুলিশের কনস্টেবল শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে আজ শনিবার দুপুরে মামলাটি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন নৌকার মালিক ঈসা, মিলন এবং মাঝি সুমন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মহানগর নৌপুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি মাসুদ। তিনি জানান, নদীতে নৌকা ভ্রমণে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক। কিন্তু গতকাল শুক্রবার নৌকার মালিকরা যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট না পরিয়ে নৌকায় উঠান। আর এই অবহেলার জন্যই নৌকাডুবির ঘটনায় দুই মালিক ও মাঝির নামে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল বিকেলে ১৩ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাডুবির পর ১১ জন সাঁতরে তীরে ফিরে এলেও দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজরা হলেন রাজধানী ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) বিবিএ তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম সূচনা (২২) এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রিমন (১৪)। নৌকাডুবির ঘটনার পর থেকেই তাদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল কাজ করছে।
রাজশাহীর ফায়ার সাভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘গতকাল বিকেলে ১৩ জন যাত্রী একটি ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে ঘুরতে বের হয়। এ সময় নবগঙ্গা এলাকায় পদ্মায় নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় ১১ জন যাত্রী স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ও সাঁতরে তীরে উঠে আসে। বাকি দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলেছে। এরপর আবারো আজ সকাল ৭টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ দুজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
জাকির হোসেন আরো বলেন, ‘শুক্রবারের উদ্ধারকৃতদের মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি নুরুন্নবী বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে যে আবর্জনা তৈরি হয় সেগুলো নদীতে জমে যাওয়ার কারণে ডুবুরিদের সঠিকভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তবুও আমরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। যতক্ষণ নিখোঁজ দুজনকে পাওয়া না যায়, ততোক্ষণ এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ওই নৌকাতে যারা ছিল তারা সবাই একই পরিবারের। তাদের বাড়ি পবা উপজেলার দামকুড়া থানার খোলাবনা গ্রামে। বেড়ানোর জন্য তারা বের হয়েছিল। পরে নৌকা ভাড়া করে পদ্মায় তারা ঘুরছিল। নিখোঁজ সুচনা ও রিমন খালাতো ভাইবোন।’