রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে লেখা এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আকস্মিক মৃত্যুতে আমি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে আপনাকে গভীর শোক ও দুঃখ জানাচ্ছি, এবং আপনার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের আজ শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতি বলা হয়, শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং প্রার্থনা শোকাহত রাজ পরিবারের সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের শোকাহত জনগণের সঙ্গে রয়েছে এবং আমরা মহামান্যের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি ও পরিত্রাণের জন্য প্রার্থনা করছি।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন যে, রানি শুধুমাত্র ২৫০ কোটি কমনওয়েলথ জনগণের স্তম্ভ এবং শক্তি ছিলেন না বরং তিনি করুণা, মর্যাদা, প্রজ্ঞা এবং সেবারও প্রতীক ছিলেন। বিশ্বের সমসাময়িক ইতিহাসে সবচেয়ে কিংবদন্তি এবং দীর্ঘতম রাজত্বকারী রাজা হিসেবে কর্তব্য, সেবা এবং ত্যাগের সর্বোচ্চ মান স্থাপন করেছেন এবং বিশ্বজুড়ে তাঁর অগণিত মানুষের কাছে উৎসর্গের একটি অতুলনীয় উত্তরাধিকার রেখে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, ‘রানি তাঁর দেশের নাগরিকদের জন্য অনুপ্রেরণা, সাহস এবং শক্তির একটি দুর্দান্ত উৎস হয়ে থাকবেন। বাঙালি জনগণের বাড়িতে তার দুটি ঐতিহাসিক রাজকীয় সফরের জন্য অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। যুক্তরাজ্যের মহামান্য রানি এবং আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি এবং অটোয়া ও কিংস্টনে দুটি কমনওয়েলথ সরকার প্রধানের বৈঠক চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি লন্ডনে ২০১৮ সিএইচওজিতে আমাদের শেষ ব্যক্তিগত আলাপচারিতার প্রশংসা করি।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে রানি সবচেয়ে আবেগপূর্ণ বার্তা দিয়েছিলেন যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা বন্ধুত্ব এবং সম্পর্কের বন্ধন ধারণ করি, যা আমাদের অংশীদারিত্বের ভিত্তি হিসাবে রয়ে গেছে এবং পঞ্চাশ বছর আগের মতো আজো তা গুরুত্বপূর্ণ। দুটি কমনওয়েলথ দেশের মধ্যে সম্পর্ককে পুষ্ট করার মাধ্যমে এটিকে বারবার হৃদয় থেকে হৃদয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর দুঃখজনক মৃত্যুতে বাংলাদেশের মানুষ এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে শুধু একজন বিশ্বস্ত বন্ধুকেই হারালাম না। একজন প্রকৃত অভিভাবককেও হারিয়েছি।’
শেখ হাসিনা এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার জন্য রাজ পরিবারের সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের জনগণ, এবং কমনওয়েলথের সদস্যদের সাহস ও দৃঢ়তা দান করার জন্য প্রার্থনা করেছেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৯৬ বছর বয়সে গতকাল বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরা ক্যাসেলে মারা যান।