রূপপুরের মালবাহী জাহাজটি নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল জানতাম না : নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল বহনকারী রুশ জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায়, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। এখন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানার পর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
রাশিয়ান জাহাজটির বিষয়ে ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা একটি জাহাজ গ্রহণে ঢাকাকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে মস্কো। ১০ দিন ধরে স্পার্টা-৩ নামের রাশিয়ান জাহাজটি গভীর সমুদ্রে (আন্তর্জাতিক জলসীমায়) অপেক্ষমাণ। এটি মোংলাবন্দরে নোঙর করতে চায়। জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মালামাল নিয়ে এসেছে।
পত্রিকাটির সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ার আশঙ্কায় রাশিয়ার ওই জাহাজকে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা। এ অবস্থায় জাহাজটিকে গ্রহণ না করলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্টের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য হুমকি সংক্রান্ত রাশিয়ার পত্র (নোট ভারবাল) পাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয় এবং কোনো অবস্থাতেই যে বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জাহাজটিকে গ্রহণ করছে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ান দূতাবাসের পাল্টাপাল্টির মধ্যেই মোংলাবন্দর অভিমুখে রাশিয়ান এমন জাহাজ আসার খবর দেয় ওয়াশিংটন।
এ জাহাজটির বিষয়ে জানতে চাইলে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ’৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে আমরা লড়াই করছি। আমাদের রাজনৈতিক যুদ্ধ বা খেলা চলমান আছে এবং এটা দেশমাতৃকার জন্য। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি মেগাপ্রকল্প। আমরা সেটাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জানান, শিগগিরই ভারতের একটি ক্রুজ বাংলাদেশে আসছে। এ বিষয়ে কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ কয়েকটি ব্যাপারে কিছুটা চ্যালেঞ্জ আছে। এসব চ্যালেঞ্জ ও ক্রুজ আগমন উপলক্ষে ভারতের একটি টিম চাঁদপুর ও মোংলা পরিদর্শন করবে। সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোভিডের পর স্থলবন্দরগুলো ফুলসুইংয়ে শুরু হয়নি। অনেক জায়গায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভিসা ইস্যু করছে না; সমস্যা হচ্ছে। সেসব বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা পদক্ষেপ নেবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত ভালো আছে। অসুবিধা নাই। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। উদ্বিঘ্ন হওয়ার কিছু নাই। এগুলো আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের কোনো বিষয় না। এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর আছে। স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে সমস্যা হয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। বিচ্ছিন্ন ঘটনা যাতে আর না হয় সেজন্য দুই দেশের সরকার কাজ করছে। অনেকগুলো স্থলবন্দর অপারেশনের অপেক্ষায় আছে। এরমধ্যে খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরও রয়েছে। রামগড় স্থলবন্দর উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সামারি পাঠানো হয়েছে। জানুয়ারিতে চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী এপ্রিল বা মে’তে পায়রা বন্দরের ফার্স্ট টার্মিনাল চালু করা হবে। আন্ধারমানিক নদীতে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে ফেরি চলবে।