রেমিটেন্স বৃদ্ধির জন্য ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হোক : শামীম হায়দার পাটোয়ারী
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটওয়ারী বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে শুধুমাত্র একটি খাত বাঁচাতে পারে তাহলো রেমিটেন্স। এ রেমিটেন্স বৃদ্ধির জন্য পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হোক। তাহলে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক বক্তব্যে শামীম এসব কথা বলেন।
জাপার এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘সারা বিশ্বে অর্থনীতি সংকট চলছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, গ্লোবাল ইকনোমিক যুদ্ধ। সারা বিশ্বে ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলছে। আমাদের দেশে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক সংকট, এ ছাড়াও রয়েছে রোহিঙ্গা সংকট।’
শামীম হায়দার বলেন, ‘আমাদের দেশের রিজার্ভ সংকট ছিল, তবে তা এখন কমে আসছে। এলএনজি থেকে আমরা যে অর্জন করছি, তা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত নই। এসডিজি গোলের জন্য আমরা প্রস্তুত নই। পৃথিবীর সকল দেশেই সংকট চলছে, তবে আমরা সেটি মোকাবিলায় প্রস্তুত নই। কেননা আমাদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি।’
সংসদ সদস্য শামীম বলেন, ‘আমাদের সরকারের কাছে বিপুল অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা কোথায় গেল? সে প্রশ্ন আমাদের। আমাদের সরকার অনেক ভাল কাজ করেছে, আবার অনেক ভুলও করেছে, আজকে সময় হয়েছে ভুল স্বীকার করার। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাশিয়া রূপপুর প্রকল্প এখানে উৎপাদন নেই, কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, রামপাল প্রকল্পে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, পায়রা বন্দর এখানে পলি পড়বে জানা কথা, এরপরও আমরা লক্ষ কোটি টাকা নষ্ট করেছি। অথচ জাইকা বলেছে, এখানে এটি সম্ভব নয়, তবু হাজার কোটি টাকা খরচ করছি। এ ছাড়া পাতাল ট্রেন, বুলেট ট্রেনের সম্ভাবতা যাচাই করতে আমরা খরচ করেছি পাঁচশ কোটি টাকা। এ ছাড়াও ৬০০ কোটি টাকার লোন নিয়ে খরচ করেছি ওয়েস্টিজ খাতে। অথচ, কোনো কার্যক্রম হাতে নিতে পারিনি।’
শামীম আরও বলেন, ‘পিডিবি প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। স্যাটেলাইট করেছি, সেখান থেকে কত আয় আসবে,পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় গৌরব, কিন্তু সেখানে থেকে রেল প্রকল্প থেকে কত টাকা আয় আসবে, তার কোন হিসাব করিনি। আমরা ব্যয় করলাম, কিন্তু আয় কত আসবে তা আমাদের হাতে নেই।’
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘উন্নয়নের অতি উৎসাহে আমরা কিছুটা উদ্ভাসিত হয়ে গেছিলাম। এসব প্রকল্পের যখন ঋণ দেওয়া শুরু হবে তখন আবার দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা শুরু হবে। দেশে দল পরিবর্তন হবে, কিন্তু কোনো ঋণ তো পরিবর্তন হবে না। দায় তো পরিবর্তন হবে না। এ লোনটা আমার কীভাবে মোকাবিলা করব? দেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধান না হলে এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দল একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব না।’
শামীম আরও বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা প্রয়োজন। এ সব সমস্যা থেকে উত্তোরণের উপায় হলো রেমিটেন্স। তাই আড়াই পার্সেন্ট থেকে ৫ শতাংশ বাড়ানো হোক। তাহলে দেশ এটা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। এ ছাড়া হুন্ডি থেকে টাকা ব্যাংকে প্রবেশ করাতে হবে। দেশের অর্থ অপচয় দেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।’