লঞ্চের ভাড়া বাড়ল ৩৫.২৯ ভাগ, ধর্মঘট প্রত্যাহার
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম শতকরা ২৩ ভাগ বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে এবার লঞ্চভাড়া ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হওয়ায় পর চলমান লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার রাত থেকেই সারা দেশে লঞ্চ চলাচল শুরু হবে।
আজ রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে লঞ্চ মালিকদের বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো ও ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লঞ্চ ভাড়া ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এক টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে দুই টাকা ৩০ পয়সা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৬০ পয়সা বেড়েছে।
১০০ কিলোমিটারের বেশির ক্ষেত্রে এক টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুই টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও ৬০ পয়সা করে বেড়েছে।
এ ছাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
বৈঠক শেষে রাতে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল, বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান, বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা এবং লঞ্চ মালিকরা অংশ নেন।
গত বুধবার সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এরপর গত শুক্রবার ভোর থেকে সারা দেশে পণ্য ও যাত্রীবাহী সড়ক পরিবহণে ধর্মঘট শুরু করে মালিক ও শ্রমিকরা।
সেই ধর্মঘট আজ তৃতীয় দিনের মতো হয়েছে। তবে বিকেলে জানানো হয়েছে, ডিজেল ও কোরোসিন তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাসভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরই মালিকপক্ষ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন এই ভাড়া আগামীকাল সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
আর গতকাল বিকেল থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রেখেছিলেন মালিকরা। সেটিও সমাধান হলো।
তবে বাংলাদেশ ট্রাক–কাভার্ডভ্যান, ট্যাংক লরি ও প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আজ বিকেলে তেজগাঁও কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। নেতারা বলেন, বর্ধিত তেলের দাম প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
বাস ও লঞ্চে ধর্মঘটের ফলে চলাচলের জন্য মানুষকে ট্রেনের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।