লেবার পার্টির সঙ্গে বিএনপির সংলাপে আন্দোলনের কৌশলগত আলোচনা
বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে আন্দোলন নামতে কৌশলগত আলোচনা করেছে বিএনপি। আজ শুক্রবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংলাপ শুরু হয়।
সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। লেবার পার্টির পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলে দলটির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। এতে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ আগামী দিনের আন্দোলনের বিষয়ে করণীয় ও বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
সংলাপে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা একটা পরিণতির দিকে পৌঁছাতে পারছি।’
ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র হরণকারী সরকারকে অপসারণের লক্ষ্যে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি'র সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা বৃহত্তর একটি আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার যে কর্মসূচি তা শুরু করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ দ্বিতীয় দিন আমরা ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
গত ২৪ মে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সংলাপ শুরু হয়। আজ লেবার পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসে বিএনপি। এদিন লেবার পার্টির অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন—ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান খালেদ, এস এম ইউসুফ আলী, আমিনুল ইসলাম রাজ, আলাউদ্দিন আলী, জহিরুল হক জহির, হিন্দু রত্ন, ঢাকা মহানগর নেতা মাওলানা আনোয়ার হোসেন এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার মিরাজুল।
২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি এবং এক যুগেও বলে আসছি, এই অনির্বাচিত সরকার দেশ ও জনগণের ক্রমাগত ক্ষতি করে চলেছে। দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে ফেলেছে। দেশের সবাইকে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। সেই সরকারের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানো এত সকল রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে গণতন্ত্রমনা মানুষের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। এই জরুরি কর্ম যৌথভাবে সম্পাদনের জন্য বৃহত্তর ঐক্য ঘর তোলার যে প্রয়াস এবং যে সিদ্ধান্ত বিএনপির, তার আলোকেই আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি।’
নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে দীর্ঘদিন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছি। তাদের সঙ্গে আজকে আমরা আলোচনা করেছি এবং সেই আলোচনায় দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। মোটামুটি আমরা একমত হয়েছি।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জাতির এক ক্রান্তিকালে আমরা আজকে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করেছি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই। একটি জগদ্দল পাথর বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসে আছে। দেশের আইনের শাসন ও মানবাধিকার শূন্যের কোঠায়। এ রকম সময় বিএনপির এই আলোচনাকে আমরা অভিনন্দন জানাই।’