শাশুড়িকে নিয়ে জামাই ‘উধাও’, থানায় শ্বশুরের অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমনীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা এমদাদুল ইসলাম ওরফে এনদা। ছবি : সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় শাশুড়িকে নিয়ে জামাই পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীকে ফিরে পেতে জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন শ্বশুর।

মঙ্গলবার দুপুরে হাতীবান্ধা থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন শ্বশুর নাছির উদ্দিন (৫০)। তিনি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের বাসিন্দা।

ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রমনীগঞ্জ গ্রামে। জামাই এমদাদুল ইসলাম ওরফে এনদা (৩৫) রমনীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বড়খাতা বাজারের হাজি জামে মসজিদ এলাকার অটোরিকশার পার্টস ব্যবসায়ী। গত ২১ জানুয়ারি শাশুড়িকে নিয়ে তিনি পালিয়েছেন।

এদিকে, এমদাদুল ইসলাম এনদার স্ত্রী নাজনী বেগম (২২) তার নির্যাতনে আহত হয়ে বর্তমানে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের নাছির উদ্দিনের মেয়ে নাজনী বেগমকে বিয়ে করেন এমদাদুল ইসলাম এনদা। নাজনী বেগমকে বিয়ের পর থেকে জামাই-শাশুড়ির মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায়ই মেয়ের বাড়ি বেড়াতে আসতেন শাশুড়ি। এ সময় স্ত্রীকে ছেড়ে শাশুড়ির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন জামাই এমদাদুল। মায়ের সঙ্গে এমন সম্পর্ক দেখে প্রায়ই স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হতো নাজনী বেগমের।

কয়েকদিন আগে নিজ বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে মায়ের মেলামেশা দেখে ফেলেন নাজনী। প্রতিবাদ করায় সাত দিন ঘরে আটকে রেখে তাকে মারধর করেন এমদাদুল। পরে নাজনী বেগম রাতে দরজা ভেঙে খালার বাড়ি উপজেলা হাতীবান্ধার ধুবনী এলাকায় পালিয়ে এসে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ সুযোগে শাশুড়িকে নিয়ে সটকে পড়েন এমদাদুল।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজনী বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু কী থেকে কী হলো নিজেও জানি না। আমার মা আমার স্বামীর বাড়িতেই বেশি সময় থাকতেন। স্বামী এমদাদুলের আমার চেয়ে মায়ের সঙ্গেই বেশি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েকদিন মায়ের সঙ্গে তার মেলামেশা দেখে ফেলি। এতে স্বামী আমাকে মারধর করে সাত দিন ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখেন। পরে রাতে অসুস্থ অবস্থায় দরজা ভেঙে পালিয়ে এসে খালার বাড়িতে আশ্রয় নিই এবং হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি হই। এ ঘটনায় আমি হাতীবান্ধা থানায় একটি নির্যাতনের অভিযোগ দিয়েছি।’

নাজনী বেগমের খালা শাহিনা বেগম (৩৫) বলেন, ‘১০ দিন আগে আমার বাড়িতে এমদাদুল ইসলাম ও আমার বড় বোন আছিতোন নেছা (৪০) আসেন। এরপর একদিন বাড়িতে অবস্থান করেই বড় বোনকে নিয়ে জামাই পালিয়ে যান। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বোনের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। শুনতে পাচ্ছি, তিনি নাকি আমার বোনকে বিয়ে করেছেন।’

শ্বশুর নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমি দিনমজুরির কাজে নোয়াখালীতে গেলে স্ত্রী আছিতোন নেছা জামাই এমদাদুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন। নোয়াখালী থেকে ফিরে এসে দেখি জামাইয়ের বাড়িতে আমার স্ত্রী নেই। জামাইকে আমার স্ত্রীর কথা বললে তিনি বিভিন্ন কথা বলে এড়িয়ে যান। স্ত্রীকে ফিরে পেতে জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করেছি।’

জামাই এমদাদুল ইসলাম এনদা বলেন, ‘আমার স্ত্রী রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি আমি এলাকার সবাইকে জানিয়েছি।’ শাশুড়িকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনে থানায় অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযুক্ত জামাইয়ের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করি।’

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’