শিরায় এসিড পুশ করে স্বামীকে হত্যা : স্ত্রী ও প্রেমিক গ্রেপ্তার
পরকীয়ার জেরে ঝগড়ার পর স্বামীকে দুপুরের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। এর প্রভাবে স্বামী ঘুমিয়ে গেলে শিরায় এসিড পুশ করেন। আর তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এভাবেই স্বামীকে হত্যার বর্ণনা দেন শেফালি বেগম।
শেফালি যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে কাজ করেন। তাঁর স্বামী নিহত জহির হাসান শহরের হুশতলা এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায়ী।
নিহত জহিরের স্বজনরা জানান, শেফালির সঙ্গে শহরের শংকরপুর এলাকার রবিউল ইসলাম সরদার নামের এক যুবকের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে গত সোমবার (৮ মে) শেফালির সঙ্গে জহিরের কথা কাটাকাটি হয়। গতকাল মঙ্গলবার মৃত্যু হয় জহিরের।
এ ঘটনায় শেফালি বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। আর তাঁর প্রেমিক রবিউল ইসলাম সরদারকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, ওষুধ ব্যবসায়ী জহির হাসানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তাঁর ভাড়া বাড়িতে যায়। মরদেহের বাম হাতের শিরায় কালো দাগ দেখে সন্দেহ হওয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জহিরের স্ত্রী শেফালিকে নেওয়া হয় থানায়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। প্রেমিক রবিউলের সহায়তায় তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে স্বীকার করেন।
শেফালি বলেন, দুপুরের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর জহির ঘুমিয়ে পড়েন। মোবাইল ফোনের ব্যাটারির ভেতরের গুঁড়া-এসিড পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি জহিরের বাম হাতের শিরায় পুশ করা হয়। শেফালির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোবাইল ফোন, ব্যাটারি ও সিরিঞ্জ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. কমান্ডার এম নাজিউর রহমান জানান, ঘটনার পর পরই ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রবিউল ইসলামের অবস্থান শনাক্ত করে আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে আটক করা হয়।
পরে নিহত জহিরের ভাই গাজী শাহনেওয়াজের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শেফালি ও রবিউল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।