শেখ কামাল আইটি সেন্টারে তরুণদের কর্মসংস্থান হবে : পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দিনাজপুরে তরুণদের কর্মসংস্থানের নুতন ঠিকানা হবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবিশন সেন্টার। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাদের আর সরকারি চাকরির পেছনে দৌড়াতে হবে না।
দিনাজপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে আজ মঙ্গলবার প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি সেক্টর থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হবে। একই সময়ে আইসিটি সেক্টরে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের তরুণরা আর চাকরির পেছনে নয় নিজেরাই উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারটি হবে দিনাজপুরে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ঠিকানা। এই পার্ক বাংলাদেশকে শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞাননির্ভর, উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। গড়ে উঠবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলা করার উপযোগী প্রজন্ম।
পলক আরও বলেন, এখানে উৎপাদনমুখী ও কর্মসংস্থানমুখী কাজ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে। যুব সমাজকে বেকারত্ব থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, দেশের তরুণদের উদ্যোক্তা ও আত্মনির্ভরশীল হতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্রেন চাইল্ড শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, স্কুল অব ফিউচার, ডিজিটাল এডুটেইনমেন্ট সেন্টারসহ দেশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
দিনাজপুরে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে হুইপ বলেন, এই পার্ক হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনমান উন্নত হবে, যুব সমাজ বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিনাজপুরের লাখ লাখ তরুণ প্রজন্মকে আগামীদিনে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে। গার্মেন্টস খাত যেমন রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রথম, আইটি খাতটিকেও আমরা এক নম্বরে নিয়ে যেতে চাই।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (১১টি) শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এ কে এম আবদুল্লাহ খান, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক (উপসচিব) মো. হুমায়ূন কবীর, দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল ইমাম চৌধুরী, দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ, মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মদানকারী শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার দিনাজপুরের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ৮৮ জন ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়। এর আগে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধান অতিথি ও অনুষ্ঠানে সভাপতি।