শেখ হাসিনার গাড়িতে হামলা, সাবেক এমপির জামিন আদেশ বাতিল
সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে হাইকোর্ট থেকে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের দুই আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার দুপুর ১২টায় বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেন।
গত ২৮ এপ্রিল শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার প্রধান ও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।
হাইকোর্টের জামিন আদেশ নিয়ে যশোর কারাগারে থেকে তাকে বের করে আনার তদবিরও চলছিল। তবে, জামিনের বিষয়টি রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর ও কার্যালয় জানতো না। গত মঙ্গলবার তাঁর জামিনের বিষয়টি জানাজানি হয়।
এরপর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে দায়িত্ব পালনকারী রাষ্ট্রপক্ষের দুজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের (ডিএজি) কাছে তাৎক্ষণিক লিখিত ব্যাখ্যা চান অ্যাটর্নি জেনারেল। কেন তাঁর (এমপি হাবিব) জামিন পাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়নি—লিখিত ব্যাখ্যায় তা জানতে চাওয়া হয়। একই সময় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, বিশেষ কোর্ট জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেছে। তাই সাবেক এমপি হাবিব আর কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
এস এম মুনীর আরও বলেন, ঈদের আগে শেষ কোর্ট ছিল ২৮ এপ্রিল। ওই দিন আদালতে বেশি ভিড় ছিল। আর ওই ভিড়ের মধ্যে এ জামিনটা করে নিয়েছিল আসামি পক্ষ।
দুই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে শোকজ করার বিষয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের দুই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ওইদিন হাবিবের জামিন পাওয়ার বিষয়ে কেন অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানানো হয়নি, তার লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
‘পরে তারা বলেছেন, ২৮ এপ্রিল হাবিবুল ইসলাম হাবিবুল হাবিবের জামিন বিষয়ে হাইকোর্ট শুধু রুল দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কর্মকর্তারা এ জামিন আদেশের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।’
তবে, হাবিবের জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশে তাঁকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সে মর্মে রুল জারির পাশাপাশি ছয় মাসের জামিন দেওয়া হয়েছিল।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা এক মুক্তিযোদ্ধার বিধবা ধর্ষণের শিকার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যাওয়ার সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়। হামলায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তাঁর গাড়িবহরে থাকা কয়েক জন আহত হন।
এ ঘটনায় ওই দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর আলোচিত এ মামলায় বিএনপির তালা-কলারোয়ার সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিন জনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।