সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপিতে ভোট আজ
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সপ্তম ধাপে আজ সোমবার ১৩৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশের ২০ জেলার ২৪ উপজেলায় এসব ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলবে।
এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের ষষ্ঠ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব ধাপে ব্যাপক নির্বাচনি সহিংসতাসহ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ধাপের ভোটেও রয়েছে শঙ্কা। যদিও নির্বাচন কমিশন থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘সপ্তম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। ১৩৮টি ইউপির মধ্যে মাত্র ৯টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। অন্যগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।’
এস এম আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘এ ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৭১ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১১ জন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম রোববার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভোটারদের বলব, নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে। ভোট নির্বিঘ্ন করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটের মাঠে নেমে পড়েছে। কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
ইসির নির্বাচন কমিশন শাখা জানায়, এই ধাপে ৫ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রার্থী এক হাজার ২৩৬ জন। এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে চার হাজার ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ধাপের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৫০টি, ভোটকক্ষ সাত হাজার ৮৫টি।
ইউপি নির্বাচনের এ ধাপে মোট ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ জন, নারী ১১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন।
নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন
এই ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি মোবাইল টিম থাকবে। প্রতি তিনটি ইউনিয়নে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে একটি করে।
প্রতিটি উপজেলায় র্যাবের মোবাইল টিম দুটি ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। আর প্রতিটি উপজেলা বিজিবির মোবাইল টিম দুটি ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি উপকূলীয় উপজেলায় কোস্টগার্ডের মোবাইল টিম দুটি (২ প্লাটুন), স্ট্রাইকিং ফোর্স একটি (এক প্লাটুন) থাকবে।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ভোটগ্রহণের আগের দুই দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দিন অর্থাৎ মোট চারদিনের জন্য প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা ও বাস্তবতার আলোকে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
চলমান ইউপি নির্বাচনে ইতোমধ্যে ছয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের দুই দফায় ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ৮৩৬ ইউপিতে ভোট হয়েছে। ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এরপর ষষ্ঠ ধাপে ২১৬ ইউপিতে ৩১ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হয়। আর অষ্টম ধাপে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আটটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে ইউপি নির্বাচন শেষ হবে।