সমুদ্র উপকূলে ভেসে আসা ট্রলারে মিলল ১০ মরদেহ
কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলের কাছে ভাসছিল ট্রলার। জেলেরা সেটিকে দেখে টেনে আনেন তীরের কাছাকাছি। তখনও জানা ছিল না, এর ভেতরে মরে পচে আছে একাধিক মানুষ। দুগন্ধ জানান দেয় তাদের। পরে ৯৯৯- এ ফোন পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ট্রলারটি তীরে এনে উদ্ধার করে একে একে ১০টি মরদেহ, যাদের সবার হাত-পা ছিল বাঁধা। সবগুলোই অর্ধগলিত। আজ রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুর থেকে টানা তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করেন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশের ধারণা, মরদেহগুলো জেলেদের। গভীর সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে ডাকাতদের কবলে পড়ে খুন হন তারা।
নাজিরারটেকের স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল গভীর সমুদ্র থেকে মাছ শিকার শেষে উপকূলে ফেরার সময় একটি বিধ্বস্ত মাছ ধরার মানবহীন ট্রলার সাগরে ভাসতে দেখে একদল জেলে। গতকাল রাতে তারা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। পরে, ট্রলারের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পুলিশের জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯- এ ফোন দেন তারা। খবর পেয়ে রাতেই সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে, জোয়ারের তীব্রতায় ট্রলারটি সেই সময় উপকূলে ভেড়ানো যায়নি।
আজ রোববার দুপুরের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ট্রলারটি উপকূলে ভেড়াতে সক্ষম হন। পরে, ট্রলারের ভেতরের কাঠের পাটাতন খুলে একে একে ১০ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাত দল গভীর সাগরে তাদের হত্যা করে ট্রলারের ভেতরে কাঠের পাটাতনে পেরেক লাগিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইয়ের টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে।’
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন বলেন, ‘১০/১২ দিন আগে মহেশখালী থেকে একটি মাছ ধরার ট্রলার গভীর সাগরে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। এটি সেটিই কিনা, তা তদন্ত করা হচ্ছে। নিহতদের শনাক্তের পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার স্টেশন অফিসার খান খলিলুর রহমান বলেন, ‘উদ্ধার করা মরদেহগুলো বিকৃত হয়ে গেছে। প্রত্যেকের হাত-পা বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদেরকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে।’
স্থানীয় জেলেদের ধারণা, নিহতরা মহেশখালী, চকরিয়া, কুতুবদিয়া বা আশেপাশের এলাকার জেলে হতে পারে। এখন পর্যন্ত ট্রলারটির মালিকানা দাবি করে ঘটনাস্থলে কেউ আসেনি।