সাইবার যুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের পরাজিত করতে হবে : পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সামনে আরেকটি যুদ্ধ অপেক্ষমাণ। আর সেটি হচ্ছে সাইবার যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি সাইবার জগতে নানা মিথ্যা ও অপপ্রচার চালিয়ে আমাদের মহান স্বাধীনতার অর্জনকে ধুলিস্যাৎ করতে চাইছে। সরকারের বিরুদ্ধে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল যোদ্ধা হিসেবে এই অপশক্তিকে সাইবার যুদ্ধে পরাজিত করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এলআইসিটি প্রকল্প আয়োজিত ‘আমার মুজিব’ ক্যাম্পেইনের আওতায় ‘আমাদের মুজিব’ শীর্ষক রচনা ও ‘মুজিবের কাছে চিঠি’ লেখা প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ডিজিটাল প্লাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন ও আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর মানবিকতা, শোষণ-বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংগ্রাম, সাহস, দূরদর্শিতা ও নৈতিকতার গুণাবলির মধ্যে নিহিত রয়েছে একজন আদর্শ মানুষ হওয়ার শিক্ষা।
পলক বলেন, যিনি বঙ্গবন্ধু মুজিবের লেখা তিনটি বই- ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী,’ ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ পড়বেন তিনি মূল্যবোধ ও নৈতিকতার শিক্ষা পাবেন। তিনি ‘মুজিব গ্রাফিক নভেল’কে প্রাথমকি স্কুলপর্যায়ে পড়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানান।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ, এলআইসিটি প্রকল্পের আইটি-আইটিইএস পলিসি অ্যাডভাইজার সামি আহমেদ, বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, বাক্কোর মহাসচিব তৌহিদ হোসেন, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরিফুল হাসান অপু, উই ফোরামের সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা।
অনুষ্ঠানে ‘মুজিবের কাছে চিঠি’ লেখা প্রতিযোগিতায় নবম ও দশম শ্রেণি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন নন্দী মজুমদার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর চিঠিটি পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন এলআইসির প্রকল্পের ডিজিটাল কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ হাসান বেনাউল ইসলাম।
সর্বমোট ৮১৪ রচনা এবং ৩৪১টি চিঠি বিচারকমণ্ডলীর মাধ্যমে বাছাই করে শ্রেণিভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ১৫ জনকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। এর মধ্যে নয়জন রচনায় এবং ছয়জন চিঠিতে।
মুজিবের কাছে চিঠি লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন- প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি ক্যাটাগরিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মডেল একাডেমির ফাইজা তাবাসসুম নুসরাত (চ্যাম্পিয়ন) ও ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নওশীন আজাদ (রানার আপ), চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি ক্যাটাগরিতে রংপুরের শঠিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লামিয়া মারজান (চ্যাম্পিয়ন) ও সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নিহাল আহমদ ও মতিঝিল সরকারি মডেল স্কুল থেকে মেধা সরকার (যুগ্মভাবে রানার আপ), ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি ক্যাটাগরিতে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের রণিত অধিকারী (চ্যাম্পিয়ন) ও ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে সাফওয়ান আজমাঈন (রানার আপ), নবম থেকে দশম শ্রেণি ক্যাটাগরিতে গোপালগঞ্জের সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের নন্দী মজুমদার (প্রথম) ও ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের মো. মুনতাজিম রহমান সায়মন (রানার আপ) এবং ‘আমাদের মুজিব’ রচনা প্রতিযোগিতায় একাদশ থেকে দ্বাদশ ক্যাটাগরিতে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের তাসনীম তিশা (চ্যাম্পিয়ন) ও ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইকরা আলম রেজা এবং একই প্রতিষ্ঠানের অথৈ দাস শৈতী (যুগ্মভাবে রানার আপ) এবং স্নাতক প্রথম ও শেষ বর্ষ ক্যাটাগরিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সাগর হোসেন চ্যাম্পিয়ন ও ঢাকা কলেজের আল মামুন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল কাইউম যুগ্মভাবে রানার আপ।
১৫ জন বিজয়ীদের মধ্যে আটজনই মেয়ে এবং তুলনামূলকভাবে ঢাকার বাইরের অংশগ্রহণকারীরা অনেক ভালো করেছে।