প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন কোনোভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। এ বিষয়ে সব ধর্মের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এই আহ্বান জানান।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আমরা বাঙালি। এর মধ্যে কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ, কেউ খ্রিষ্টান। আমাদের একমাত্র পরিচয় হওয়া উচিত আমরা বাঙালি। এই দেশের প্রকৃতি কেমন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নির্ধারণ হয়ে গেছে। এটা বাঙালিদের দেশ, এটা বাংলাদেশিদের দেশ। এই দেশের মানুষ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। এটা কারও করুণা নয়।’

সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার গ্যারান্টি দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি কেমন হবে সেটা আমাদের সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। কার স্ট্যাটাস কেমন হবে, সেটাও উল্লেখ আছে। আমরা কেউ মেজরিটি না আবার কেউ মাইনরিটিও না। সবাই আমরা এদেশের নাগরিক। সবার পরিচয়, আমরা বাঙালি। কেউ নিজেকে মাইনরিটি কমিউনিটির লোক হিসেবে ভাববেন না। এটা ভাবার কোনও অবকাশ নেই।’

এ সময় হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দুর্নীতি, মানিলন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে সবাইকে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশের সংবিধান মানি তাহলে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এদেশের সবাই বাঙালি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলে যার যার ধর্ম আমরা পালন করব। আমাদের ইসলামের নবী বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, ধর্ম নিয়ে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণে অনেক জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আসুন, ধর্মের বাণী ধারণ করে আমরা সৎ থাকব, আমরা দুর্নীতির কাছে যাব না, আমরা মানিলন্ডারিং করব না। আমরা সব ধর্মের মানুষ মিলে এই দেশকে গড়ে তুলব। কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে দেব না।’

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ব্যয় সংকোচন করে চলার আহ্বান জানিয়ে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করব। আমরা মিত্যবায়ী হব।’

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।