আইনের আশ্রয় লাভ সাংবিধানিক অধিকার : প্রধান বিচারপতি
‘আইনের আশ্রয় লাভ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার’ বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় নওগাঁ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী ও সাক্ষীদের সাময়িক বিশ্রামের স্থান ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, যাঁরা আইনের আশ্রয়ের জন্য আদালতে আসেন তাঁরা খুব সুখী মন নিয়ে যে আসেন, তা নয়। বিপদে পড়েই আদালতে আসেন। সেই বিপদগ্রস্ত মানুষগুলোর একটু বিশ্রামের সুযোগ করে দিতেই ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নামে বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হয়েছে। বিপদগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করবে এই ন্যায়কুঞ্জ।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ন্যায়কুঞ্জ একটি প্রজেক্ট হিসেবে গ্রহণ করেছে সরকার। আমার পূর্বসূরী হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী যখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন, সে সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বলে নজরে আনেন যে, আমাদের দেশে আদালতে বিচারপ্রার্থী মানুষ ও সাক্ষীদের বিশ্রাম বা বসার ব্যবস্থা থাকে না। বিশেষ করে মহিলারা তাঁদের সঙ্গে দুগ্ধপোষ্য বাচ্চা থাকে, তাঁরা বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন না। এমনকি সৌচাগার পর্যাপ্ত না থাকায় তাঁরা প্রাকৃতিক কর্ম করতে পারেন না। এই দুর্ভোগ লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় আদালত চত্বরে ন্যায়কুঞ্জ নামে বিশ্রামাগার নির্মাণের প্রস্তাব করেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অত্যন্ত হৃদ্যতার সঙ্গে গ্রহণ করে ৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। সেই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪টি জেলায় ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণ করা হয়েছে।
ন্যায়কুঞ্জের রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ন্যায়কুঞ্জে যাঁরা আসবেন অর্থাৎ বিচারপ্রার্থী মানুষ এখানে আসবেন, তাঁরা এর সদ্ব্যবহার করবেন। এটি যাতে ভালোভাবে পরিচর্যা করা হয়, এটি আমি জেলা জজ সাহেবকে অনুরোধ করব। যাঁরাই এর দায়িত্বে থাকবেন তাঁরা যেন এটি ভালোভাবে দেখভাল করেন।
ন্যায়কুঞ্জ মামলা জট লাঘবে সহায়ক হবে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপ্রার্থী মানুষ ও তাঁদের পক্ষে সাক্ষী যারা আসবেন, তাঁরা এখানে বসে বিশ্রাম নিয়ে দিনের শেষে ভালোভাবে সাক্ষী দিয়ে যেতে পারবেন। তাহলে দেখা যাবে বিচারের জট যেটা আছে, এটাও ধীরে ধীরে খুলে যাবে। মামলা জট লাঘবে সহায়ক হবে ন্যায়কুঞ্জ।
জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীর, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার সাইফুর রহমান, জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।