সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে ৬ সদস্যের কমিটি করা হয়। এ কমিটি আগামী ৫ বছরের জন্য একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন কমিশনারের নাম প্রস্তাব করবেন। তাঁদেরকে পরবর্তীতে নিয়োগ দিবেন রাষ্ট্রপতি।
সার্চ কমিটি গঠনের পর আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিএনপি ও ২০ দলের নেতারা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সার্চ কমিটি হলো মানুষকে বিভ্রান্ত করা। আওয়ামী লীগের বাইরে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার প্রত্যাশা করে। দলনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন কোনোটাই নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। এটা লোক দেখানো সার্চ কমিটি, ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যায় না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সার্চ কমিটি হোক, আর যে নির্বাচন কমিশনই হোক, এ সরকার থাকলে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি ঘোষণা আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চুরির প্রকল্পের অংশ। এই সরকার ভোট চুরির সরকার। নতুন নিরপেক্ষ সরকার আসবে। সেই সরকারের অধীনে সার্চ কমিটি গঠিত হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে গঠিত ছয় সদস্যের সার্চ কমিটিতে আছেন হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাবনিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. মুসলিম চৌধুরী (পদাধিকার বলে), বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন (পদাধিকার বলে) এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন—সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এ সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন কমিশন গঠন আইনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে সার্চ কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু হয়। গত ১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় সংলাপ। প্রায় প্রতিটি দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তবে বিএনপি ও সিপিবিসহ কিছু দল সংলাপে অংশ নেয়নি।