সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল আধুনিকায়নে ব্যয় ৩০ কোটি টাকা : মেয়র তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম বেগবান করতে ও গণপরিবহণকে শৃঙ্খলায় আনতে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের চলমান সংস্কার ও উন্নয়নকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র তাপস বলেন, আমরা বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে শুরু করেছি। আমাদের একটি যাত্রাপথ শুরু হয়েছে। আরও তিনটি যাত্রাপথ আগামী ১ সেপ্টেম্বর আমরা উদ্বোধন করব। সেসব কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য নিজ অর্থায়নে আমরা আমাদের সায়েদাবাদ আন্তজেলা ও সিটি বাস টার্মিনালের আধুনিকায়নের কাজ আরম্ভ করেছি। প্রায় ৩০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে আমরা এ কার্যক্রম নিয়েছি।
আগামী মার্চের মধ্যে চলমান কাজ শেষ করার আশাবাদ জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালটি অনেকদিন আগে নির্মাণ হওয়ার পর কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। এখানে জলাবদ্ধতাসহ অবকাঠামোগুলো খুবই খারাপ অবস্থা ও ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। এখন ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটি আধুনিক করা হচ্ছে। বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা শহরের গণপরিবহণকে যাতে শৃঙ্খলার আওতায় আনা যায়, সে জন্য আমরা এই কাজটি হাতে নিয়েছি।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকে অত্যন্ত কার্যকর, আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় টার্মিনাল হিসেবে পরিচালিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে আলাদাভাবে বাস রাখার জায়গা, শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা, শৌচাগার করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রীরা যাতে ভেতরে প্রবেশ করে সেবা নিতে পারেন, সে রকম করে আমরা এই পুরো সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
এ সময় বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় দক্ষিণ সিটি কর্তৃক দুটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ সম্পর্কে বর্ণনা করে মেয়র বলেন, আমরা দুটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি কাঁচপুরে, অন্যটি কেরাণীগঞ্জের কাছাকাছি। এর মধ্যে একটি জমির অধিগ্রহণ হয়েছে, আমরা হস্তান্তর চেয়েছি। আরেকটি জমির অধিগ্রহণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এগুলো নির্মাণ হতে আরো তিন-চার বছর লেগে যাবে। এর মধ্যে বাসগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে, সে জন্যই আমরা বাস টার্মিনাল সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছি।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু পথ টার্মিনালের কাছে এসে সংকীর্ণ হয়ে গেছে। তাই আমরা নিচের রাস্তা সংস্কার ও প্রশস্ত করার কাজ হাতে নিয়েছি। টার্মিনালের ভেতর দিয়ে উড়াল সেতুতে প্রবেশের পথ রয়েছে, কিন্তু সেগুলো কার্যকর নয়। সে জন্য আমরা নতুন করে এটা কার্যকর করতে পরিকল্পনা করেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, পোস্টার, বিভিন্ন ধরনের রং দিয়ে লিখে আমাদের অবকাঠামোগুলোকে আচ্ছাদিত করা হয়। এখানে জনগণের সচেতনতাই মুখ্য। আশা করি তারা এগুলো থেকে বিরত থাকবেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের আইন রয়েছে, কিন্তু আমরা প্রয়োগ করি না। অবকাঠামো নির্মাণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হলে এর উৎকর্ষতার জন্য যা করা দরকার, আমরা করব। অবকাঠামো সুন্দর, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। এরপর মেয়র জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে ধানমণ্ডি হ্রদে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউস প্রজাতির ৩০০ কেজি পোনা অবমুক্ত করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দার আলী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মশিউর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-১-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।