সিন্ডিকেটের কবলে অস্থির মোংলার নিত্যপণ্যের বাজার
আজ বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল রোববার পবিত্র মাহে রমজান শুরু। এদিকে, চাঁদ দেখার আগেই বেগুন, শসা, খিরা ও কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুণ।
মোংলা পৌর শহরের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দু-তিন দিন আগেও যে বেগুনের কেজি ছিল ৩০-৪০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। ৩০ থেকে ৩৫ টাকার শসা, খিরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। ৫০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এ ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে অন্যান্য সবজিরও।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়িয়েছে, তাই তাঁরাও বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। তবে, মোংলা পৌর শহরের প্রধান বাজারে দেখা গেছে কাঁচামালের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। বাজারে কোনো কাঁচামালের ঘাটতি নেই।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারদের সঙ্গে যোগসাজশে স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্রই পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ক্রেতাদের। এসব নিয়ে অবশ্য মাথা ব্যথা নেই স্থানীয় প্রশাসনের। ক্রেতারা বলছেন, প্রশাসনের তদারকি না থাকায় সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়া।
উপজেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য নূর আলম শেখ বলেন, দেশের সব জায়গায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। তার প্রভাব মোংলা পৌর শহরের বাজারেও পড়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি, তারপরও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অকল্পনীয়। ফলে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। পৌর শহরের আশপাশের বাজারগুলোতেই এসব পণ্যের দাম কম। অথচ পৌর শহরের সিন্ডিকেট চক্রই প্রধান এ বাজারে দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। সিন্ডিকেট না ভাঙলে কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
শহরের বাইরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলেন, মোংলা বাজারের পাঁচটি সমিতির (মাছ, মাংস, পান, মুরগি ও কাঁচাবাজার সমবায় সমিতি) সিন্ডিকেট চক্রই এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে পৌর শহরের হাজার হাজার ক্রেতা সাধারণ। পাঁচ সমিতির সমন্বয়ে গঠিত নতুন এ সিন্ডিকেট চক্রের সভাপতি আফজাল ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ওরফে কসাই নজরুল ও ক্যাশিয়ার আলম ওরফে আলু আলম।
সমিতির নেতা আফজাল ফরাজী বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বার্থে, অর্থাৎ কোনো ব্যবসায়ী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য এক হয়েছি, ব্যবসায়িক শত্রু মোকাবিলা করতে, দাম বাড়ানোর জন্য নয়। যদি কেউ দাম বাড়ায়, আমরা তার পক্ষে থাকব না।’ যারা দাম বাড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষে থাকবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দু-এক দিনের মধ্যে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক দোকানে মূল্য তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক করা হবে। আর, সিন্ডিকেট চক্রও ভাঙা হবে বলে জানান তিনি।