সুচিকিৎসার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর, বিএসএমএমইউতে হাসান আজিজুল হক
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহীর হযরত শাহমখদুম (র.) বিমানবন্দর থেকে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়। এরপর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিককে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হকের চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছেন। তিনিই তাঁকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরের জন্য বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রখ্যাত এই কথাশিল্পীর সুচিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।’
বাদশা আরও জানান, ঢাকায় নেওয়ার পর কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে রিপোর্ট এসেছে নেগেটিভ।
এর আগে সকালে নগরীর চৌদ্দপাই এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটির (বিহাস) বাসা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসান আজিজুল হককে বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সে তখন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাও ছিলেন। বিমানবন্দরে তিনি বলেছিলেন, ‘অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আমরা তাঁর পাশে আছি।’ এখন চিকিৎসার জন্য হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘হাসান আজিজুল হক কাউকে চিনতে পারছেন না বলে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, সেটা সঠিক নয়। তিনি আমাদের সবাইকে চিনতে পেরেছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।’
বিমানবন্দরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকনেতা শাহ আজম শান্তনু বলেন, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মাইনর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাঁর হার্টে আগে থেকেই একটি রিং পরানো আছে। এখন তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন, হাঁপিয়ে উঠছেন। এ ছাড়া শরীরে তাঁর লবণের ঘাটতি আছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে পরিবারের সদস্য তাঁকে হাসপাতালে নেননি।
হাসান আজিজুল হকের বয়স ৮২ পেরিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটানা ৩১ বছর শিক্ষকতার পর ২০০৪ সালে তিনি অবসর নেন। এরপর বিহাসে নিজের ‘উজান’ নামের বাসায় থাকেন। গত ১৬ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ছেলে ইমতিয়াজ হাসান জানান, গত এক মাস ধরেই তাঁর বাবা ‘ভীষণ’ অসুস্থ। এরপর তাঁর অসুস্থতার খবর জানাজানি হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার ফেসবুকে স্টাট্যাস দিয়ে হাসান আজিজুল হকের চিকিৎসার ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চান সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। এর পরদিন শুক্রবার তিনি শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে অনলাইনে একটি সভাও করেন। পরে রাতে সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁকে দেখতে যান। আজ সকালে হেলিকপ্টারে হাসান আজিজুল হককে ঢাকায় নেওয়া হয়।